Obesity

ওজন মাত্রাতিরিক্ত বাড়লে কোভিড কাবু করে দেয় বেশি, বলছেন চিকিৎসকরা

কোভিড অতিমারিতে সব থেকে কম সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছেন ভিয়েতনামে। এই দলে আছে জাপান, তাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২১ ১৪:০৩
Share:

ওজন বাড়লে, কোভিডে বিপদের আশঙ্কা বাড়ে। ছবি: সংগৃহীত

কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসছে কিনা তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। এরই মধ্যে সতর্কবার্তা শুনিয়েছে ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন। যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা বেশি, কোভিড ১৯ ভাইরাস তাঁদেরই বেশি কাবু করে ফেলে। এঁদের মৃত্যুহার অন্যদের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশন ১৬০টি দেশের কোভিড আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, কোভিড অতিমারিতে সব থেকে কম সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছেন ভিয়েতনামে। এই দলে আছে জাপান, তাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর কারণ এই সব দেশের মানুষের মধ্যে মোটা চেহারার মানুষের সংখ্যা নগণ্য। এই সব দেশে প্রতি ১ লক্ষ কোভিড আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ০.০৪ জন। অন্য দিকে, ৪০ শতাংশেরও বেশি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে আমেরিকার কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে প্রতি ১ লক্ষে মারা গিয়েছেন ১৫২.৪৯ জন। ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের সিইও জোহানা র‍্যালস্টন ওজন স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে জোর দিতে বলেছেন। ইন্টারন্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকার জানিয়েছেন, কোভিড সংক্রমণ হলে শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি মোটা চেহারার মানুষদের মধ্যে অনেক বেশি।

Advertisement
  • বাড়তি ওজন ফুসফুসের উপরে বেশি চাপ দেয়। দীপঙ্কর জানালেন যে, যাঁদের ভুঁড়ি আছে তাঁদের ফুসফুসের মধ্যচ্ছদায় বাড়তি চাপ পড়ে ফুসফুস কিছুটা সংকুচিত হয়ে থাকে। এর ফলে বাতাস টানার সময় ফুসফুস সম্পূর্ণ ভাবে প্রসারিত হয়ে পুরোপুরি বাতাস নিতে পারে না। তাই ফুসফুস কিছুটা কমজোরি হয়ে পড়ে।
  • এঁদের শ্বাসনালীও কিছুটা সংকুচিত হয়ে যায়।
  • তাই কোভিড বেশি ওজনের মানুষদের ভীষণ ভাবে কাবু করে ফেলে।
  • বাড়তি ওজনের মানুষদের এম্বোলাইজেশনের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এম্বোলাইজেশনের অর্থ, রক্তে ভেসে বেড়ানো চর্বির ডেলা কোনও ধমনিতে আটকে যাওয়া। এর ফলে রোগীর হৃদপিণ্ড, ফুসফুস বা মস্তিষ্কে রক্তচলাচল কমে যায়।
  • এ রকম হলে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে।
  • ওজন বেশি হলে যে কোনও সংক্রমণে সাইটোকাইন স্টর্ম শুরু হয়। ব্যাপারটা এই রকম, আমাদের শরীরের পাহারাদার শ্বেত কণিকা সংক্রমণ তাড়াতে গিয়ে অতিরিক্ত সাইটোকাইন নিঃসরণ করে। এর ফলে শরীরের মধ্যে 'সাইটোকাইন ঝড়' সৃষ্টি হয়ে রোগীর অবস্থা দ্রুত গুরুতর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। মোটা চেহারার মানুষদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি।
  • বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই ৩০-এর বেশি হলে কোভিড ১৯-এর সংক্রমণে মৃত্যুর হার স্বাভাবিক ওজনের মানুষের তুলনায় প্রায় ৩ গুণ (২.৯ গুণ) বেশি।
  • তাই ওজন কমানোর ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এখন থেকেই। কোমর ও পেটের মেদ কমাতে যোগাসন ও ব্যায়াম করতে হবে। ২০–৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement