হাওড়া ব্রিজে চলছে তাপমাত্রা স্ক্রিনিং। ছবি: পিটিআই।
মাস্ক, সাবান আর স্যানিটাইজার। এই তিন প্রধান অস্ত্রেই কোভিড-১৯-কে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছ। লকডাউন চলাকালীন তো বটেই, তা উঠলেও এই সাবধানতাগুলো আমাদের মেনে চলতে হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। লকডাউন উঠলে ধীরে ধীরে জীবিকার প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরতেও হবে। তাই নিয়ম ভাঙলে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশি।
করোনা আটকানোর টিকা না আসা অবধি এই সব সতর্কতা তো মানতে হবেই, এমনকি, টিকা আসার পরেও এটি দীর্ঘ কাল মেনে চলতে হতে পারে। নিজেদের জন্যে তো বটেই, বাড়ির অন্য সদস্যদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলা খুব জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়ি থেকে পেট ভরে খেয়ে বেরন, কত সময় বাইরে থাকতে হবে সেই অনুযায়ী কিছু খাবার সঙ্গে নিয়ে যাবেন। নিয়ম করে আপেল, কলা, লেবু, শসা বা আঙুর খেতে হবে। বাইরের খাবার যতটা এড়ানো যায়, ততই ভাল। বাইরে বেরলে বা বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পর কী কী নিয়ম মেনে চললে হবে?
আরও পড়ুন: লকডাউনে এই সব ব্যায়াম করুন, প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে
• অফিসে বেরনোর সময় চেষ্টা করুন ফ্লাক্সে গরম জল নিয়ে যেতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারে বারে অল্প করে গরম জল পান করলে করোনা-সহ যে কোনও ড্রপলেট সংক্রমণ কিছুটা অন্তত প্রতিহত করা যায়।
• বেরনোর সময় মুখে কয়েক কুচি আদা রাখুন। আদার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রোগ ঠেকাতে সাহায্য করবে
• এই সময়ে বাইরে বেরতে হলে ঘড়ি ও আংটি পরবেন না। এতে হাত পরিষ্কার করতে অসুবিধা হবে।
• বাজার-দোকান করার জন্য বাইরে যেতে হলে বাড়িতে মোবাইল রেখে যান। যাঁদের অফিস করতে হয়, তাঁরা মোবাইল রাখুন ব্যাগের মধ্যে। পথে খুব দরকার না হলে ফোন বার করবেন না। মোবাইল থেকেও যে সংক্রমণ ছড়ায়, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহাতীত।
• গাড়িতে একা যাওয়াই ভাল। পিছনের সিটে বসুন। সম্ভব হলে অফিসে অনুরোধ করুন গাড়িতে যেন নিয়ম করে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়।
আরও পড়ুন: কনজাংটিভাইটিসও হতে পারে করনোর কারণে! কারা সাবধান থাকবেন?
হাত ধোওয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন।
• নিয়মিত বেরতে হলে দু’টি মাস্ক ব্যাগে রাখুন। মুখে বাঁধা মাস্ক কোনও কারণে নষ্ট হলে বা ভিজে গেলে কাজে লাগবে।
• বাড়ি ফিরে মাস্ক নিয়মিত কাচতে হবে। অফিসে পৌঁছে কচলে হাত ধুয়ে নিন। সঙ্গে সাবান ও স্যানিটাইজার রাখতে ভুলবেন না।
• জুতোর সঙ্গে মোজা পরুন। বাড়ি ফিরে জুতো-মোজা খুলে হাতে নিয়ে সোজা বাথরুমে চলে যান।
• জুতো সাবান দিয়ে ধোওয়া সম্ভব নয় সব সময়। এমন হলে স্যানিটাইজার দিয়ে ধুয়ে নিন। রোদে শুকাতে পারলে ভাল হয়। তা সম্ভব না হলেও বাড়ির ভিতরের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
• বাজারের ব্যাগ তো বটেই, অফিসের ব্যাগও সাবান জল, কীটনাশক মেশানো জল বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মেশানো জলে তুলো ভিজিয়ে তা দিয়ে মুছে নিতে পারেন। বাজারের ব্যাগ অবশ্যই কেচে নেবেন।
• সার্জিকাল মাস্ক হলে এক দিন ব্যবহারের পর সেই মাস্ক ফেলে দিন। দোওয়া-কাচা যায় এমন মাস্ক পরলে বাড়ি ফিরে মাস্ক ও যাবতীয় পোশাক সাবান দিয়ে কেচে নিতে হবে।
• মোবাইল ফোন বন্ধ করে ভাল ভাবে স্যানিটাইজার দিয়ে মুছে নিন। মোবাইলের কভার আলাদা ককে সাবান জলে ডুবিয়ে বা সাবান দিয়ে ঘষে কেচে নিন।
• বাড়িতে থাকলেও ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
তবে এই সব নিয়ম শুধুমাত্র যে লকডাউন চলাকালীন মেনে চলতে হবে, তা কিন্তু নয়। এই পরিচ্ছন্নতাকে জীবনের অঙ্গ করে নিতে পারলে সাধারণ জ্বর, সর্দি, গলাব্যথা ও জলবাহিত পেটের অসুখের মতো অনেক সংক্রমণই আটকানো যাবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)