মানসিক চাপ থেকে ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সমস্যা বাড়ছে। ফাইল ছবি।
করোনা-কালে অনিয়মিত ঋতুস্রাবে ভুগছেন বহু মহিলাই। কারও ডেট এগিয়ে যাচ্ছে, কারও পিছচ্ছে, কারও খুব কম হচ্ছে তো কারও হচ্ছে বেশি। দু-এক মাস পিছিয়ে গেলে বা না হলে, গর্ভসঞ্চার হল ভেবে বাড়ছে উদ্বেগ। অথচ সংক্রমণের ভয়ে যেতে পারছেন না ডাক্তারের চেম্বারে। যার পরিণতি খিটখিটে মেজাজ, ধৈর্যহীনতা।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ শঙ্করনাথ মিত্র জানিয়েছেন, "এ নিয়ে অত চিন্তা করলে বরং সমস্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর মূলে আছে মানসিক চাপ। করোনার কারণে মানসিক চাপ বেড়েছে সবারই। তার হাত ধরে স্ত্রী-হরমোনের তারতম্য হয়ে এ রকম হচ্ছে। কাজেই টেনশন ভুলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চলুন। সব ঠিক হয়ে যাবে।"
সমাধান
• করোনার কারণে যদি মানসিক চাপ বাড়ে, শুধু পিরিয়ডের গোলমাল নয়, আরও অনেক সমস্যা হতে পারে। কাজেই নিজেকে চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আলোচনা করুন। দেখবেন আপনি একা নন, তাঁদেরও কারও কারও হয়তো এই সমস্যা হয়েছে। কাজেই এত টেনশন করার কিছু নেই।
• মন ভাল রাখতে ব্যায়ামের বড় ভূমিকা আছে। কাজেই রোজ মিনিট ২০ জোর কদমে হাঁটুন। যোগা-মেডিটেশন করুন।
• স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অন্য কোনও কারণে এ রকম হচ্ছে কি না, তা-ও জানা দরকার। প্রয়োজনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান ও ওষুধ খান।
• সুষম খাবার খাওয়ার সঙ্গে কয়েকটি ঘরোয়া অনুপানও খেয়ে দেখতে পারেন।
আরও পড়ুন:বিখ্যাত মানুষের আত্মহত্যার খবরে কি মানুষ আরও বিপন্ন বোধ করেন? কী বলছেন মনোবিদরা
ঘরোয়া অনুপান
• কয়েক মাস কাঁচা পেপের রস খেতে পারেন। পিরিয়ড চলাকালীন খাবেন না।
• কাঁচা হলুদ হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখে, প্রদাহ কম রাখে, ব্যথাও কমায়। কাজেই সকালে হলুদ-দুধ বা গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে কাঁচা হলুদ বাটা খেতে পারেন ভাতের সঙ্গে।
• অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর মজ্জা মধু দিয়ে খালি পেটে খাওয়া যায়।
• এক চামচ আদা বাটা জলে ফুটিয়ে খান দিনে ৩ বার, খাবার খাওয়ার পরে।
• দু-চামচ জিরে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে সেই জল খান সকালে।
• গরম দুধে এক চামচ দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে পেট ব্যথা কিছুটা কমতে পারে।
নতুন কিছু ওষুধের সাহায্য নিয়ে রোগের কষ্ট কমানো যায়। অনেক সময় পিলের সাহায্যে অসুখ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অবিবাহিত মেয়েদের কন্ট্রাসেপটিভ পিল নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকে ভয় পান।
আরও পড়ুন:শৌচাগারে পড়ে গিয়েছিলেন প্রণববাবুও, বয়স বাড়লেই কি বাড়ে ঝুঁকি?
মনে রাখতে হবে, এটা নেহাতই একটি ওষুধ। বাড়াবাড়ি হলে অস্ত্রোপচার করানো দরকার। অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে ভয় পেলে চলবে না। আবার অনেক সময় এন্ডোমেট্রিওসিসের কষ্ট সহ্য করতে করতে ডিপ্রেশন হতে পারে। বাড়ির লোকজনের সহমর্মিতা ও দরকার হলে কাউন্সেলিং করাতে হতে পারে। করোনার ভয়ে অসুখ চেপে না রেখে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ভাল থাকুন।