চেয়ার যোগ— গডেস স্কোয়াট। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ— গডেস স্কোয়াট
শরীর ভাল রাখার পাশাপাশি মন ভাল রাখা দরকার। নিয়মিত যোগাসন করে মনের অনেক সমস্যা দূরে সরিয়ে রাখা যায়। গডেস স্কোয়াট বা দেব-দেবীর ভঙ্গিমার আসন অভ্যাস করে মানসিক শক্তি পাওয়া যায়। সাধারণত গডেস স্কোয়াট দাঁড়ানো অবস্থান থেকে অভ্যাস করা হয়। কিন্তু সকলের পক্ষে মাটিতে দাঁড়িয়ে আসন করা সম্ভব হয় না। তাঁরা চেয়ারে বসেও এই আসন করতে পারেন। যোগশাস্ত্র মতে, নিয়ম করে গডেস স্কোয়াট অভ্যাস করলে সূর্যের ছটা থেকে শক্তি সংগ্রহ করে মানসিক দৃড়তা ও আত্মবিশ্বাস বজায় থাকে।
কী ভাবে করব
• মেরুদণ্ড সোজা রেখে চেয়ারে বসুন, মাটিতে পা ঠেকিয়ে রাখতে হবে দৃঢ় ভাবে। মাথা ও ঘাড় যেন এক সরলরেখায় থাকে, খেয়াল রাখুন। চোখ বন্ধ করে দুই হাত রাখুন কোলের উপর। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
• এ বার দুই পা চেয়ারের দু’পাশে নিয়ে যেতে হবে, নিতম্বের অবস্থান হবে চেয়ারের মাঝখানে।
• সুবিধা মতো দুই পা চেয়ারের দুই প্রান্তে রাখতে হবে। দুই পায়ের আঙুল থাকবে পাশের দিক করে। যতটা সম্ভব হবে ঠিক তত টুকুই ফাঁক করে রাখবেন।
• এই বার দুই হাত ভাঁজ করে নমস্কারের ভঙ্গিতে জড়ো করে বুকের কাছে আনতে হবে। ঘাড়, মাথা ও পিঠ সোজা ও টানটান রাখবেন।
• চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন ৫–৭ বার। এটিই চূড়ান্ত অবস্থান। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৩ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
• আসন অভ্যাসের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেবেন।
আরও পড়ুন: ৭৪তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
সতর্কতা
পা, ঊরু বা কোমর বা হাতে খুব ব্যথা যন্ত্রণা কিংবা চোট থাকলেও এই আসন অভ্যাস করতে পারেন। সইয়ে সইয়ে ধীরে ধীরে যতটুকু পারেন ততটাই অভ্যাস করতে হবে।
কেন করব
মন ভাল রাখতে এই আসনটি অত্যন্ত উপযোগী। দাঁড়িয়ে স্কোয়াট অভ্যাস করার বেশির ভাগ উপকারিতাই এই গডেস স্কোয়াটে পাওয়া যায়। বয়স বাড়লে বা গর্ভবতীদের নানা কারণে দাঁড়িয়ে গডেস স্কোয়াট অভ্যাস করা সম্ভব হয় না। তারই পরিবর্তিত রূপ চেয়ারে বসে গডেস স্কোয়াট। নিয়মিত এই আসন অভ্যাস করলে নিতম্ব, কোমর, পায়ের পেশী-সহ শ্রোণীদেশের পেশীতে রক্ত চলাচলের মাত্রা বাড়ে বলে পেশীর সুস্থতা বজায় থাকে। পেট ও শরীরের নিম্নাঙ্গ টোনড হয় ও সক্ষমতা বাড়ে। বিশেষ করে হবু মায়েদের শ্রোণীদেশের প্রসারণ স্বাভাবিক থাকে বলে সন্তানের জন্ম দিতে সুবিধা হয়। আর প্রণামের ভঙ্গিতে হাত জড়ো করা থাকায় মস্তিষ্কের চাপ কমে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসে ও মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।