চেয়ার যোগ, মার্জারি আসন। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ, মার্জারি আসন
বিড়ালের আড়মোড়া দেওয়ার ভঙ্গিতে মেরুদণ্ড স্ট্রেচ করার এই আসনটি সাধারণত হাঁটু ভাঁজ করে মাটিতে বসে করা হয়। কিন্তু যাঁরা মাটিতে বসতে পারেন না, তাঁরা চেয়ারে বসেও যোগাসনটি করতে পারেন।
এই আসন অভ্যাস করলে শিরদাঁড়ার উপরের দিকের অংশের সঙ্গে কাঁধের এবং নীচের অংশের সঙ্গে শ্রোণীদেশের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। ব্যথা-বেদনা ও স্টিফনেসের সমস্যা থেকে রেহাই মেলে।
কী ভাবে করব
• মেরুদণ্ড সোজা করে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসুন। মা মাটিতে রাখুন দৃঢ় ভাবে।মাথা ও ঘাড় সোজা থাকবে।দুই হাত রাখুন কোলের উপর।ভুলেও চেয়ারে হেলান দেবেন না। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
আরও পড়ুন: ৬৭তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
• দুই হাত টানটান করে দুই হাঁটুর উপর রাখুন। এ বার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে পিঠের দিকে হেলে কাঁধ টানটান করে বুক সামনের দিকে আনতে হবে। ঘাড় পিছন দিকে করে মুখ সামান্য উঁচু করুন।
• এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিঠ কুঁজো করে বুক সামনের দিকে টেনে নিতে হবে। এই সময় চিবুক বুকে ঠেকান। কাঁধও সামনের দিকে ঝুঁকে আসবে। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থাকতে হবে। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। বেশি স্ট্রেন না করে ধীরে ধীরে আসনটি করতে হবে। ৫–৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
• অভ্যাস করা শেষ হলে চোখ বুজে কোলের উপর দুই হাত রেখে কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম নিন। পিঠ, ঘাড় ও বুকের পাঁজরে আরাম অনুভব করবেন। এই আসনটি অভ্যাস করার সময় তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। ধীরে ধীরে সইয়ে সইয়ে অভ্যাস করতে হবে।
কেন করব
চেয়ার যোগার সব থেকে সহজ কিন্তু কার্যকর আসন এই মার্জারি আসন।নিয়মিত আসনটি অভ্যাস করলে শিরদাঁড়া সামনে ও পিছন উভয় দিকেই নোয়ানো হয় বলে মেরুদণ্ডের স্টিফনেস কমে গিয়ে নমনীয় হয়। যে কোনও বয়সে মার্জারি আসন অভ্যাস করা যায়। ঘাড়, পিঠ, কোমর ও শ্রোণীদেশে স্ট্রেচিং হয় এবং একই সঙ্গে পেটের ভিতরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ফলে হজম সংক্রান্ত সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়। নিয়মিত অভ্যাস করলে কিডনি ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে রক্ত চলাচল বাড়ে বলে এদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পিঠ, ঘাড় ও কোমরের ব্যথা কমে। রোজ নিয়ম করে আসন অভ্যাস করলে মন শান্ত থাকে, জীবনের নানা চাপের মোকাবিলা করা সহজ হয়।