eye

লকডাউনে সারা ক্ষণ মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার? চোখ বাঁচাতে মেনে চলুন এ সব

দিনের শেষে জবাব দিচ্ছে চোখ। চোখ জ্বালা, চোখ কড়কড় করা, চোখ লাল হওয়া, চোখে ভারী ভাব, ঝাপসা দেখা, কপাল-ঘাড়-পিঠ-মাথা জুড়ে ব্যথা হওয়া, সবই বসেছে জাঁকিয়ে।

Advertisement

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ১১:৫৬
Share:

চোখের যত্ন নিতে মেনে চলুন কিছু বাড়তি নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।

চোখেরই তো কাজ দিনরাত। হয় ঘরে বসে অফিসের কাজ করার সময় একটানা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকা, নয়তো টিভিতে পছন্দের অনুষ্ঠান বা খবরে মন। সঙ্গে আবার রয়েছে মোবাইলের স্ট্যাটাস আপডেট চেক করার কাজও।

Advertisement

লকডাউনের আগেও এ সব চলত অবশ্যই, কিন্তু এত মাত্রায় নয়। কিছু সময়ের অভাবও ছিল। কিছুটা নিয়মও ছিল তাতে। যেমন, অফিসে মনিটরের সঙ্গে চোখের দূরত্ব থাকত মোটামুটি ঠিকঠাক। এখন ঘরে ল্যাপটপে কাজ করতে গিয়ে সে হিসেব গুলিয়ে যাচ্ছে। আগে একটু-আধটু বই পড়া কি গান শোনার চল ছিল, এখন দুঃসংবাদ শোনার নেশায় অবসর সময়ের সব নজরটুকুই টিভিতে। ফলে দিনের শেষে জবাব দিচ্ছে চোখ। চোখ জ্বালা, চোখ কড়কড় করা, চোখ লাল হওয়া, চোখে ভারী ভাব, ঝাপসা দেখা, কপাল-ঘাড়-পিঠ-মাথা জুড়ে ব্যথা হওয়া, সবই বসেছে জাঁকিয়ে।

চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সুমিত চৌধুরীর মতে, “সারা ক্ষণ ডিজিটাল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে, চোখ পলক ফেলতে ভুলে যায়, আর তাতেই বিপদ হয়। এমনিতে মিনিটে যত বার শ্বাস চলে ততবার চোখের পলক পরার কথা। অর্থাৎ মিনিটে ১৮ বার। যাতে কিছু তৈলাক্ত ও জলীয় পদার্থ সমান ভাবে মণির উপর ছড়িয়ে পড়ে চোখকে সুস্থ ও সবল রাখতে পারে। একমনে ডিজিটাল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে ১৮ বারের বদলে ৫-৯ বার চোখের পলক পড়ে। চোখ শুকোতে থাকে। দেখা দেয় যাবতীয় উপসর্গ, যাকে বলে ‘ড্রাই আই সিনড্রোম’।” বিশেষজ্ঞদের অভিমত, অনেক ক্ষণ কাজ করলে চোখের মণিকে ক্রমাগত স্ক্রিনের চারপাশে ঘোরাতে হয় বলেও পেশীতে চাপ পড়ে। ক্লান্ত হয় চোখ। যত বেশি সময় ল্যাপটপ, টিভি, মোবাইল সঙ্গী হয়, তত বাড়ে বিপদ। যাঁদের চোখে খুব বেশি মাইনাস পাওয়ার আছে, তাঁদের বেশি সমস্যা হয়। চশমা না পরে কাজ করলে এই সমস্যা বাড়ে।

Advertisement

আরও পড়ুন: লকডাউনে ক্লান্তি কমিয়ে তরতাজা থাকতে চান? তা হলে মেনে চলুন এ সব

চোখের চাই বিশ্রাম ও নিয়ম

স্ক্রিন টাইম কমানো হল প্রথম কাজ। অফিসের কাজ কমানো যাবে না, কিন্তু মাঝে মাঝে বিরতি দিতে হবে। ৩০-৪৫ মিনিট টানা কাজ করার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। একটু জল খান। সে সময় টিভি দেখা বা লম্বা টেক্সট করা চলবে না।

• অফিসে যে ভাবে কম্পিউটার সেট করা আছে, ঘরেও সে ভাবে করে নিন। সঠিক উচ্চতার চেয়ার-টেবিলে বসে মনিটর ২২ ইঞ্চি দূরে রেখে কাজ করুন। ঘরের আলোর উজ্জ্বলতা যেন মনিটর থেকে একটু কম থাকে।

• বই পড়া বা দূরে দেখার চশমা পরে কাজ করলে সমস্যা হতে বাধ্য। কম্পিউটারে কাজ করার জন্য আলাদা চশমা লাগে। সেটা পরে কাজ করুন।এক-আধ ঘণ্টা বাদে বাদে টেবিলে দুই কনুই রেখে হাতের তালুতে চোখ দুটো চেপে ধরে রাখুন ২-৩ মিনিট।

কম্পিউটারে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় চশমা ব্যবহার করলে চোখ খারাপের ঝুঁকি কমে। ছবি: শাটারস্টক।

• ২০ মিনিট অন্তর মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে ২০ ফুট দূরের কিছুর দিকে ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। চোখের পলক ফেলুন ২০ বার।

• মাঝেমাঝে চোখে-মুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন খানিক ক্ষণ। বন্ধ চোখের পাতায় ঠান্ডা গোলাপ জলে ভেজানো তুলো রাখলে ক্লান্তি কমবে সহজে।

আরও পড়ুন: সামনে দুর্দিনের ছায়া, এই সব উপায়ে খরচ কমিয়ে সঞ্চয় বাড়ান

• দূরে দেখার চশমা থাকলে ওই চশমা পরে টিভি দেখুন। ঘরের আলো জ্বালিয়ে রাখবেন। বসে টিভি দেখাই সবচেয়ে ভাল। অন্তত মশারির মধ্যে শুয়ে দেখবেন না।

• ঘুমের সমস্যা থাকলে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল বন্ধ করে দেবেন। কারণ স্ক্রিন থেকে যে নীল আলো বেরয়, তাতে ঘুমের ব্যাঘাত হয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তার বদলে বই পড়া শুরু করুন। চোখও বিশ্রাম পাবে, ঘুমেরও অসুবিধে হবে না।

• নিয়ম মেনে সমস্যা না কমলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement