child

করোনা-হানা থেকে বাঁচাতে সন্তানকে আদর করার সময় এ সব মেনে চলুন

কয়েকটি সতর্কতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিলে হয়তো আমরা সবাই সুস্থ থাকতে পারি আর ভাল রাখতে পারি আমাদের প্রিয় কচিকাঁচাদের।

Advertisement

নিশান্তদেব ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ১৬:৫৪
Share:

শিশুকে আদর করার সময় কোনও ভাবে লালা নাক মুখে লেগে সংক্রমিত হতে পারে রোগ। ছবি: আইস্টক।

বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই টলমল করে নতুন বেরনো দু’টি বা চারটি দাঁত বার করে হাসতে হাসতে হাত দুটোকে সামনের দিকে বাড়িয়ে যখন ছুটতে ছুটতে আসে কোলে নেওয়ার আকুতি নিয়ে, কোন বাবা-মায়ের পক্ষেই কি সম্ভব এমন আকুতিতে আমল না দেওয়া? নিজেকে সামলাতে না পেরে কোলে নিয়ে, দিয়েই দিলেন অনেকগুলো চুমু। আর করোনা সংক্রমণের বাজারে সেখানেই বিপদ!

Advertisement

করোনাভাইরাস কে আটকাতে আমরা বার বার বলছি সোশাল ডিস্ট্যান্সিং-এর কথা। সেই অবস্থায় চুমু খাওয়া একদম উচিত নয়। করোনাভাইরাস লালারসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। শিশুরা করোনাভাইরাসের জীবাণু বহন করতে পারে কোনও রোগ লক্ষণ ছাড়াই। সে ক্ষেত্রে তাদের মুখ ও লালারসের সংস্পর্শে বড়দের চোখ, নাক, মুখ এলে সংক্রমণের আশঙ্কা তো থাকেই।

উল্টো দিক দিয়ে জিনিসটা যদি ভেবে দেখি। এই লকডাউন এর সময়েও আমাদের অনেককেই কিন্তু একটু আধটু বাইরে বেরতেই হচ্ছে, হয় জীবিকার কারণে, নয়তো অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র কিনতে। যদি আমাদের শরীরে কোনও ভাবে জীবাণু প্রবেশ করে যায়, সবার প্রথম কিন্তু তা বাসা বাঁধবে নাক, নেসো ফ্যারিংস আর গলাতেই। সেক্ষেত্রে কথা বলতে বলতে মুখ এর কাছে মুখ নিয়ে আদর করার সময় বড়দের শরীর থেকেও ছোটদের শরীরে সংক্রমিত হয়ে যেতে পারে জীবাণু। আর ওদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম থাকার কারণে সহজেই ধরে যেতে পারে এই রোগ।

Advertisement

আরও পড়ুন: পরোক্ষে ঘ্রাণশক্তিকে নষ্ট করে কোভিড-১৯, জানাল গবেষণা

আদর করতে গেলে কী ভাবে ছড়াতে পারে সংক্রমণ?

• আদর করার সময় গালে ও মুখে হাতের স্পর্শ থেকে করোনাভাইরাস আমাদের হাত থেকে শিশুর গালে গেল, আর সেখান থেকে পরবর্তী কালে নাক, চোখ, মুখে প্রবেশ করতে পারে।

• আদর করার সময় কথা বলতে বলতেই সাধারণত সবাই আদর করে। এই সময় মাস্ক নিশ্চয়ই কেউ পরেন না। কথা বলার সময় যে ড্রপলেট তৈরি হয় তা অত্যন্ত সহজে পৌঁছে যায় শিশুটির নাক ও মুখে। সেখান থেকেই সোজা ঢুকে পড়ে শ্বাসনালীতে।

• আদর করার সময় কোনও ভাবে লালা নাক মুখে লেগে সংক্রমিত হতে পারে রোগ।

• খুব সহজেই ছোটরা কেঁদে ফেলে। দু’গাল বেয়ে বয়ে চলে অশ্রুধারা। আমরা অনেক সময় হাত দিয়ে মুছিয়ে দিই চোখের জল বা শাড়ির আঁচল তো আছেই। কিন্তু এক বারও কি তার আগে ভাবি যে আমার হাত বা শাড়ির আঁচল কতটা পরিষ্কার?

আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করুন সঠিক ডায়েট দিয়ে

তাদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটান।

বাচ্চাদের আদর করার সতর্কীকরণ

কয়েকটি সতর্কতা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিলে হয়তো আমরা সবাই সুস্থ থাকতে পারি আর ভাল রাখতে পারি আমাদের প্রিয় কচিকাঁচাদের।

• বাইরে গেলে জামাকাপড় পাল্টান ও হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে তবে শিশুদের কাছে আসুন।

• সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সঙ্গে কখনও কখনও ফেসওয়াশ দিয়ে মুখও পরিষ্কার করে নিন। বিশেষ করে আদর করার আগে-পরে।

• ফ্লাইং কিস করতে শিখিয়ে দিন। এই সময়ে মুখে মুখ লাগিয়ে চুমু খাওয়ার চাইতে ওটা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

• যদি চুমু দিতেই হয়, চেষ্টা করুন মুখের কাছে মুখ না নিয়ে যেতে। মাথা পিঠ ঘাড়, এই সব জায়গায় দিন হামি।

• মুখ দিয়ে লালা বেরিয়ে এলে তা হাত, শাড়ির আঁচল বা সালওয়ারের‌ ওড়নাতে না মুছে টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।

• চোখের জল মোছাতেও টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন।

(লেখক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement