প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
করোনা হওয়ার পর মানুষের শরীরে স্বাভাবিক নিয়মেই রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি হয়। এবং ধরে নেওয়া হয় সেই ক্ষমতা অন্তত ৩ মাস থাকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, সেই ক্ষমতা আরও দীর্ঘদিন থাকতে পারে। তবে কার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কতটা কার্যকরী হবে, সেটা নির্ভর করে শরীরে সংক্রমণ কতটা ছড়াচ্ছে, এবং একজন ব্যক্তির বয়স এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার উপর।
একবার রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কাজ করা শুরু করে। সেরে যাওয়ার পর ৯০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত এই ক্ষমতা সবচেয়ে শক্তিশালী হয় বলে ধরে নেন চিকিৎসকেরা। তাই সেরে যাওয়ার ৩ মাস পর পর্যন্ত একজন ব্যক্তির পক্ষে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরে নেওয়া হয়।
রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কখন বেশি
ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে শরীরের কোষগুলো যখন আক্রমণ করে তখন, শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা জেগে ওঠে। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তারা তৈরি হয়। সংক্রমণ যত বেশি হবে, রোগ প্রতিরোধক কোষগুলি তত বেশি লড়াই করবে। এবং সেটা শরীর জানান দেয় নানা রকম উপসর্গের মাধ্যমে। যেমন জ্বর, গায়ে-হাত-পায়ে ব্যথা, কাশি ইত্যাদি। ভাইরাস যত বেশি শরীরে ছড়াবে, তত বেশি দিন নানা রকম উপসর্গ চোখে পড়বে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের ৫টার কম উপসর্গ ছিল, তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির সংখ্যা তুলনায় কম পাওয়া গিয়েছে। যাঁদের জ্বর খুব বেশি ছিল, কিংবা দীর্ঘদিন ধরে ছিল তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডির সংখ্যা অনেকটা বেশি। তাই ধরে নেওয়া হয় উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ যাঁদের ছিল, তাঁদের তুলনায় যাঁরা একটু বেশি দিন ভুগেছেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা আরেকটু বেশি দীর্ঘস্থায়ী হবে। তবে বয়স এবং শরীরে আগে থেকেই অন্য কোনও রোগ ছিল কিনা, তার উপরও নির্ভর করবে কার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কতটা।
রোগ যত গুরুতর, ভবিষ্যত কি তত সুরক্ষিত
যাঁদের মৃদু উপসর্গের পর খুব কম সময়ের মধ্যে এই রোগ সেরে যায়, তাঁদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা একটু তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায় বলে দেখা গিয়েছে। যদিও পাকাপাকি ভাবে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনও মেলেনি, তাও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, যাঁদের শরীরে করোনার মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল, তাঁদের দীর্ঘ লড়াই করে সুস্থ হতে হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারপর তাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে। টি-সেল’এর স্মৃতিও তাঁদের শরীরে বেশি দেখা গিয়েছে।