প্রদর্শনীর নাম ‘নয়েজ অব মেনি ওয়াটার্স...’।
কখনও ভেনিস, কখনও লন্ডন। কখনও আবার ঘরের কাছের ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, হাওড়া ব্রিজ। জল রঙে, তুলির টানে গত চার দশক ধরে কত জায়গার গল্প যে তুলে ধরেছেন শিল্পী পরেশ মাইতি। তেমনই বহু কাজ এ বার দেখা যাবে এক ছাদের তলায়।
আগামী ১২ তারিখ থেকে পরেশের পেন্টিং নিয়ে সিমা গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রদর্শনীর নাম ‘নয়েজ অব মেনি ওয়াটার্স...’। শিল্পীর আঁকা ১২০টি ছবি থাকছে প্রদর্শনীতে। সঙ্গে থাকবে একটি ইনস্টলেশন ও পরেশের তৈরি একটি ফিল্মও।
এই প্রদর্শনীর মূল ভাবনার কেন্দ্রে রয়েছে জল। জলের ধারের নানা গল্প, জলের রং, জলের শব্দ— নানা ভাবে দেখা যাবে প্রদর্শনীর বিভিন্ন ছবিতে।
এই প্রদর্শনীর মূল ভাবনার কেন্দ্রে রয়েছে জল। জলের ধারের নানা গল্প, জলের রং, জলের শব্দ— নানা ভাবে দেখা যাবে প্রদর্শনীর বিভিন্ন ছবিতে। সিমা গ্যালারির তরফে মুখ্য প্রশাসক প্রতীতি বসু সরকার জানান,পরেশ বড় হয়েছেন তমলুকে। সেই এলাকার চারধারে রয়েছে বিভিন্ন জলাশয়। ছোটবেলা থেকেই শিল্পীর কাছে জল খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জল দেখতে ও তার ছবি আঁকতে পছন্দ করেন। প্রতীতি বলেন, ‘‘এই প্রদর্শনী দেখতে দেখতে মনে হতে পারে, আপনি একটি নদীর মধ্যে দিয়ে নৌকায় চেপে ভেসে চলেছেন। প্রতিটি পেন্টিং যেন এক-একটি দৃশ্য, যা পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন একে একে।’’ তিনি আরও জানান, জল রং নিয়ে শিল্পী কী ভাবে পরীক্ষা করছেন, তা দেখার মতো। তাঁর বক্তব্য, জল রং নিয়ে কাজ করা কঠিন। তাতে ভুল-ত্রুটি হলে ঢাকা দেওয়া আরও কঠিন। তাই বহু শিল্পীই জল রং এড়িয়ে চলেন বলে বক্তব্য প্রতীতির। গত চার দশক ধরে সেই মাধ্যম ব্যবহার করেই বার বার কাজ করতে দেখা গিয়েছে শিল্পী পরেশকে। জলের কথা তিনি কী ভাবে রঙের মাধ্যমে বলেন, তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। এত দিনের সেই কর্মযজ্ঞকেই শ্রদ্ধা জানাবে এই প্রদর্শনী। তবে জল রঙে পেন্টিংয়ের পাশাপাশি এই প্রদর্শনীতে থাকছে শিল্পীর লাইন ড্রয়িং এবং স্কেচও।
নানা ধরনের কাজ করেন পরেশ। বিভিন্ন মাধ্যমে ছবি আঁকেন। এত বছরের এত কাজের মধ্যে থেকে ১২০টি বেছে নেওয়ার পিছনে বিশেষ ভাবনা আছে শিল্পীর। তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় আঁকা ছবি থাকছে এখানে। কোনও জায়গার ছবি যেন বাদ না যায়, সে দিকে সচেতন ভাবে নজর রেখেছেন। শিল্পী বলেন, ‘‘ছবি আঁকার জন্য ঘুরে বেড়াতে ভাল লাগে আমার। কিছু কিছু জায়গায় গেলে ছবি আঁকার অনুপ্রেরণা পাই। প্রতিটি শহরের আলাদা ছন্দ। শুধু ভেনিস শহরেই গিয়েছি অন্তত ২৭ বার। প্রতি বার নতুন ধরনের, অন্য রকমের ছবি তৈরি হয়। রোজই যে বদলাতে থাকে যে কোনও শহরের ভাব। চলাফেরা, ভাবনা-চিন্তা। সে সব ছবিই থাকছে এই প্রদর্শনীতে।’’