সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর থেকে সিমা আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে ‘আর্ট ইন লাইফ’ প্রদর্শনী। তারই উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মুনমুন সেন।
প্রত্যেক বছরের মতোই এ বারের প্রদর্শনীতেও রয়েছে নানা প্রদেশের শাড়ি, পোশাক তৈরির কাপড়, ঘর সাজানোর সামগ্রী, গয়না এবং আরও টুকিটাকি। একঘেয়ে শাড়ির বাইরে যদি অন্য ধরনের শাড়ি এ বার পুজোয় কিনতে চান, তা হলে অবশ্যই যেতে পারেন এই প্রদর্শনীতে। সপ্তাহের প্রত্যেক দিনই খোলা। চলবে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত।
মধ্য ভারতের এই ধোলাবেড়ি শাড়ি দেখেই এগিয়ে গেলেন মুনমুন সেন। আঁচলে এত ধরনের রং এবং রঙিন পশুপাখির আঁকিবুকি চোখ টেনেছে মুনমুনের। এবারের প্রদর্শনীতে এই রকম বেশ কিছু শাড়ি রয়েছে। নিখুঁত কারুকাজ এবং নানা রকম রঙের এই শাড়িগুলি প্রত্যেকটাই আর পাঁচটা শাড়ির চেয়ে একদম আলাদা।
নানা প্রদেশের শাড়ি মুনমুনকে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন রাখি সরকার। প্রত্যেক বছরই তিনি ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের তাঁতিদের কাজ সংগ্রহ করে এনে এই প্রদর্শনী সাজান।
এ বছরের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ যেমন অন্ধ্রপ্রদেশের তাঁতিদের তৈরি জামদানি শাড়ি। জামদানিকে আমরা বাংলার বৈশিষ্ট্য বলেই জানি। কিন্তু এই শাড়িগুলি তৈরি করেছেন অন্ধ্রের ‘মাস্টার’ কারিগর।
প্রত্যেক বছরের মতোই এ বছরও শহরের বেশ কিছু ডিজাইনার অংশ নিয়েছেন এই প্রদর্শনীতে। পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বিশেষ উদ্বোধনেও। সুতি, লিনেন এবং সিল্কের পশ্চিমী পোশাক চাইলে আপনি পারমিতার পোশাকগুলি দেখতে পারেন। হাল্কা ধরনের লিনেন পরেও আরাম। প্রত্যেকটি পোশাকের কাট ও সিল্যুয়েট ঢিলেঢালা। তাই কলকাতার আবহাওয়ায় পরার জন্য আদর্শ। হাল্কা রঙের পাশাপাশি এ বারের পশরায় রয়েছে কিছু গাঢ় মেটালিক রংও। উৎসবের মরশুমের সঙ্গে মানানসই।
অন্য ধরনের ব্লাউজ কিনতে চান? তা হলে শহরের আরেক ডিজাইনার পরমা ঘোষের পশরায় নজর দিন। কোনওটা লেসের কাজ করা, কোনওটায় থ্রি-ডি ফুলের কারুকাজ, কোনওটায় স্ট্রবেরি মোটিফ— মনের মতো রং এবং কারুকাজের ব্লাউজ পেয়ে যাবেন। কাঁথার কাজ করা শাড়ি যেমন রয়েছে, তেমনই বাংলা চলচ্চিত্র বা কলকাতার ছোঁয়া পেয়ে যাবেন পরমার অনেক শাড়িতে।
গত বছরই কলকাতা তাঁর প্রিয় ডিজাইনার শর্বরী দত্তকে হারিয়েছে। পুরুষদের সাজতে শিখিয়েছিলেন যিনি, তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এ বারের প্রদর্শনীতে রয়েছে তাঁর সৃষ্টি ‘শূন্য’এর পোশাক। উৎসবের মহলে জমকালো সাজে পুরুষরাই বা কেন পিছিয়ে থাকবেন? এই সম্ভার থেকে বেছে নিতে পারেন মনের মতো পাঞ্জাবি, ধুতি এবং অন্য পোশাক।
পুজো মানেই নিজের বাড়িটাও একটু নতুন করে সাজিয়ে তোলা চাই। প্রদর্শনীতে পেয়ে যাবেন নানা ধরনের টুকিটাকি। তাঁর মধ্যেই বেছে নিতে পারেন অভিনব কিছু জিনিস। রাজস্থানের মরুভূমির সাপুড়েদের তৈরি এই কাঁথার নাম ‘সামি’। আপনার বসার ঘরের দেওয়ালে রাখলে চমকে যাবেন অতিথিরা।
থান কাপড় থেকে পোশাক তৈরি হলে বাদ পড়ে অনেক টুকরো টুকরো কাপড়। আবার পুরনো পোশাকও রিসাইকেল করার পর বেঁচে থাকে অনেক কিছুই। সেগুলি জুড়ে রকমারি বটুয়া তৈরি করে ‘একতারা’ নামে এক সংস্থা। পরিবেশ -বান্ধব বটুয়াগুলি কিন্তু দেখতে দারুণ। উৎসবের মরশুমে দিব্যি মানানসই।
তা হলে আর দেরি কেন? পুজোর কেনাকাটা শুরু করে দিন।