অনেকেই একথা মনে করেন যে, আমাদের শরীরে একবার কোনও বড়সড় রোগ বাসা বাঁধলে, ভবিষ্যতে সেই রোগ আর দ্বিতীয়বার ফিরে আসে না। তবে চিকেন পক্সের মতো রোগের ক্ষেত্রে এই কথাটিই সঠিক বলে মানা হলেও ডেঙ্গির ক্ষেত্রে এই কথার কোনও সত্যতা বা যৌক্তিকতা নেই।
বর্তমান সময় ডেঙ্গি হল সবচেয়ে ভয়ংকর একটি রোগ। এডিস মশার কামড়ে মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তবে অন্যান্য রোগের মতো এই রোগের সংক্রমণ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে হয় না। এক্ষেত্রে একজন মানুষ, দিনের যে কোনও সময়, যে কোনও মরশুমে এই রোগে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রতিরোধমূলক যত্ন নেওয়াই আবশ্যিক।
এমন অনেক মানুষই আছেন যারা ডেঙ্গি সম্পর্কে হু এর যে বক্তব্য সেই বিষয়ে অবগত নয়। হু এর মতে, ডেঙ্গি মুলত দুরকম। একটি নন সেভেয়ার ডেঙ্গি, আরেকটি সেভেয়ার ডেঙ্গি। নন সেভেয়ার ডেঙ্গির ক্ষেত্রে সাময়িক কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যেমন - জ্বর, মাথা ব্যাথা, গা-হাত-পা ব্যাথা, এবং দুর্বলতা। এই সমস্ত ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজন, তবে তা কখনই দীর্ঘ সময়ের জন্য না। সেভেয়ার ডেঙ্গির ক্ষেত্রে, রোগীর প্লেটলেট অত্যাধিক মাত্রায় কমে যায়, প্লাজমা লিকেজ হয়, মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয় এবং শরীরের একাধিক অরগ্যান নষ্ট হতে থাকে। এই ধরনের ডেঙ্গির ক্ষেত্রে উচ্চ মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
অর্থাৎ, ডেঙ্গি সম্পর্কে মানুষের যে অদ্ভুত ধারনা রয়েছে তার বিপরীতে বলা যেতে পারে, মানুষ জীবনে একাধিকবার ডেঙ্গির শিকার হতে পারেন। তবে প্রথম বার আক্রান্ত হওয়ার তুলনায়, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে, তা আরও বেশি মারাত্মক। কিন্তু কেন?
বিজ্ঞানীরা প্রতিটি ডেঙ্গি সেরোটাইপের মধ্যে কিছু অ্যান্টিজেনিক পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন যা নিশ্চিত করে যে একটি ভাইরাল স্ট্রেনে আক্রান্ত ব্যাক্তি একই ধরণের অ্যান্টিজেনিক্যালি বিভিন্ন ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে না। বরং পুনরায় ডেঙ্গি সংক্রণের জন্য তা উন্মুক্ত রেখে দেয়।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে ভাইরাসের প্রকারের চেয়ে ভাইরাসের অ্যান্টিজেনিক বৈশিষ্ট্যগুলির পার্থক্য রয়েছে। কোট ভাইরাসগুলি রোগির ইমিউন সিস্টেম থেকে তাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সনাক্ত করে এবং সেই সমস্ত ভাইরাসগুলিকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এর ফলে একাধিক সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং তা আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে। এটি ২০১৫ সালে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, তাদের গবেষণাগারে এর সন্ধান পায়।
বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অধিক মাত্রায় মশারাও তাদের রোগ বিস্তার করতে শুরু করে দিয়েছে। এদের হাত থেকে বাঁচতে হলে, সবথেকে ভাল উপায় হল, চারপাশের প্রতিটি মশাকে মেরে ফেলা। গোদরেজ কালা হিট - এর মতো মশা মারার স্প্রে শুধু যে মশা মারতে আপনাকে সাহায্য করবে তাই নয়, এই স্প্রে আপনাকে দেবে স্বচ্ছল, রোগমুক্ত ও জীবাণুমুক্ত একটি সুন্দর জীবন। মনে রাখবেন, একটি মশাও কিন্তু আপনার জীবনের পক্ষে সাংঘাতিক হয়ে উঠতে পারে। আপনার উচিত সঙ্গে সঙ্গে তাকে মেরে ফেলা। আপনার সুরক্ষার দায়িত্ব আপনারই হাতে।