এখন দশ ঘণ্টা সমাজমাধ্যম ব্যবহার করেন। —ফাইল চিত্র
যে সমাজমাধ্যম তাঁকে তারকা করেছে, সেই সমাজমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারই তাঁকে ঠেলে দিয়েছিল শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার মধ্যে। এমনই দাবি করলেন ফেনেলা ফক্স নামে এক ব্রিটিশ মডেল। ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকের মতো বিভিন্ন মঞ্চে মডেলিং করলেও তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এক ওয়েবসাইট। সেই অর্থে তিনি ‘বড়দের মডেল’। সেই সাইট থেকেই তাঁর আয় প্রায় দশ লক্ষ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৯ কোটি টাকারও বেশি। সেখানেই ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতেন তিনি। আর তাতেই দেখা দেয় বিড়ম্বনা।
ফেনেলা জানিয়েছেন, দিনে প্রায় চোদ্দ ঘণ্টা ফোন ব্যবহার করতেন তিনি। আর তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কর্মসূত্রে কিছু দিনের জন্য পর্তুগাল গিয়েছিলেন তরুণী। সেখানেই ঘাড়ের সমস্যা দেখা দেয়। ক্রমে দেহের অন্যান্য অঙ্গেও দেখা দেয় সমস্যা। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও, তাঁরা জানান সম্ভবত স্নায়ুর সমস্যা থেকেই হচ্ছে এমনটা। সমস্যা এতই গুরুতর ছিল যে, ক্রমাগত মাথা ঘোরাত তাঁর। বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা ছিল না। হাঁটতে গেলেই পড়ে যেতেন। হুইলচেয়ারে করে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। বিষয়টি নিয়ে তিনি এতই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন, যে উদ্বেগ কমাতে রীতিমতো ওষুধ খেতে হয়। তরুণীর দাবি, তাঁর আগে থেকেই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা ছিল। উদ্বেগের ফলে অনেকটাই বেড়ে যায় সেই সমস্যাও। তৈরি হয়েছিল মৃত্যুভয়ও। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, ‘সাইবার মোশন সিকনেস’ বলে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে।
কঠিন সময়ে পাশে এসে দাঁড়ান মা-বাবা, দাবি ফেনেলার। স্নান থেকে খাওয়াদাওয়া, সবই করিয়ে দিতেন তাঁরা। ভেবেছিলেন কাজ ছেড়ে দেবেন। বাবা-মা নিষেধ করেন। তার পরই সিদ্ধান্ত নেন, ফোন ব্যবহার করা কমিয়ে দেবেন। সিদ্ধান্ত নেন, সারা দিনে কোনও মতেই দশ ঘণ্টার বেশি ফোন ব্যবহার করবেন না। সময় কমাতে টিকটক করা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, এখন মডেলিং করার পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও অনলিফ্যানের মঞ্চে প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে একটি বইও লিখে ফেলেছেন তিনি।