পাকা, শুকিয়ে যাওয়া বা পচা ফল থেকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে পারে কি? ছবি: সংগৃহীত
কোভিড সংক্রমণের পাশাপাশি এখন আতঙ্ক ছড়িয়েছে মিউকরমাইকোসিস নিয়েও। ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নামে পরিচিত হয়ে যাওয়া এই ছত্রাক সংক্রমণ নিয়ে নানা তত্ত্বও বিপুল গতিতে ছড়াচ্ছে। তার মধ্যে কিছু ঠিক হলেও, অধিকাংশই গুজব। হালে অনেকেই দাবি করেছেন, পাকা, পচা বা শুকিয়ে যাওয়া ফল থেকে ছড়াচ্ছে এই ছত্রাক। কথাটা কি আদৌ ঠিক?
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণগুলি কী কী? চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘অতিরিক্ত স্টেরয়েডের ব্যবহার একটা ব়ড় কারণ। তা ছাড়া যাঁরা কোভিড সংক্রমণ আটকাতে দীর্ঘ দিন ধরে জিঙ্ক খেয়ে এসেছেন, তাঁদেরও এই ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে।’’ যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি তাঁদেরও এই ছত্রাক সংক্রমণের হার বেশি— তেমনই বলছেন সুবর্ণ।
কিন্তু ফল থেকেও কি হতে পারে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ? গবেষণা বলছে, এই ছত্রাকের কণা নাকে ঢুকলে তা থেকে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ হতে পারে। তা হলে ফলের গায়ে এমন ছত্রাক জন্মালে তা কি মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে?
হালে এমস-এর প্রধান, চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমন কথা অনেকে বললেও এখনও পর্যন্ত তার সপক্ষে বিশেষ কোনও প্রমাণ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘বিভিন্ন রাজ্য মিউকরমাইকোসিসকে মহামারির তকমা দেওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এবং সেখান থেকেই নানা ভ্রান্ত ধারণা এবং গুজব সৃষ্টি হচ্ছে।’’ ফল থেকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হওয়ার কোনও প্রমাণ নেই, এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই ছত্রাকের বিপদ এড়াতে নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করাটাই সবচেয়ে বেশি দরকারি।
(‘মিউকরমায়োসিস’ আদৌ ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নয়। বস্তুত, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ বলে কোনও রোগ নেই বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
অথচ ঘটনাচক্রে, রোগটি এই নামেই আমজনতার কাছে অনেক বেশি পরিচিত। সেই কারণেই আনন্দবাজার ডিজিটাল সাধারণ ভাবে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নামটি ‘মিউকরমায়োসিস’-এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে। অজ্ঞানতাবশত নয়।)