মুরগি, খাসি তো অনেক হল। এ বার চেখে দেখুন ‘ফেয়ারফিল্ড বাই ম্যারিয়ট’এর বারবিকিউ পর্ক। ছবি- সংগৃহীত
বাঙালির তো বারো মাসে তেরো পার্বন। তবে সেই পার্বন তো এখন শুধু পুজোতে আটকে নেই। বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সব উৎসবেই মেতে ওঠে কলকাতা। আর সঙ্গে যখন খাওয়াদাওয়ার পর্ব থাকে, তখন তো আর কথাই নেই। তবে এ সবের পাশাপাশি কলকাতায় কিন্তু এখন মেতে উঠেছে আইপিএল উৎসবেও। শুক্রবার ক্রিকেটের এই মহারণের সূচনা হয়ে গিয়েছে। দিনের নানা সময়ে পছন্দের ক্রিকেট দলের হয়ে গলা ফাটাতে হবে। কিন্তু তার মাঝে খাওয়াদাওয়ার কী ব্যবস্থা হবে? ক্রিকেটের আনন্দ যাতে মাটি না হয়, তাই কলকাতার বেশ কিছু ক্যাফে এবং রেস্তরাঁ সেজে উঠেছে তাদের নতুন নতুন খাবারের পসরা নিয়ে। গিয়ে খেতে পারেন, আবার বাড়িতে আনিয়েও নিতে পারেন। দেখে নিন কোনটি আপনার পছন্দ।
ক্যান্টিন পাব অ্যান্ড গ্র্যাব
আইপিএল জ্বরে কাঁপছে কলকাতা। পছন্দের দলকে সমর্থন করতে পৌঁছে যান সল্টলেকের এই ঠিকানায়। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়া সব দলের নাম অনুসারে সাজানো হয়েছে খাবারের মেনু। গুজরাট্স রোস্টেড ঘি মটন, রাজস্থানের পনির সিজ়লার, পঞ্জাবের ধাবা মটন সিজ়লার, এগ তাওয়া ফ্রাই সিজ়লার, লখনউয়ের তুন্ডে কবাব, চেন্নাইয়ের চিকেন উইংগ্স সিজ়লার, আমচি মুম্বইয়ের তাওয়া ফিশ সিজ়লার, কলকাতার তন্দুরি রসগোল্লা সিজ়লার, হায়দরাবাদের ক্কুকড সিজ়লার, বেঙ্গালুরুর সেজ়ুয়ান হোল তেলাপিয়া সিজ়লার— কী নেই তালিকায়? আর আছে হরেক রকম পানীয়। সে সবও ওই দলের নামেই।
ট্রাফিক গ্যাস্ট্রোপাব
আইপিএলের কথা মাথায় রেখেই সেজে উঠেছে আরও একটি রেস্তরাঁ। রাজস্থানি অনিয়ন কাচোরি, চেন্নাই স্পেশাল মটন রোল, সুগন্ধি কবাব, পঞ্জাবি চিকেন তন্দুরি, মুম্বই কে কলিওয়াড়া প্রন, লখনউ গিলৌটি কবাব, বেঙ্গালুরু কি দিলখুস। এ ছাড়াও রয়েছে কলকাতা নকআউট, রাজস্থান রয়্যাল্স, হায়দরাবাদি বাউন্সার, দিল্লি ডায়নামিক, মুম্বই মেগাস্টার, চেন্নাই নট আউট, কিং অফ পঞ্জাবের মতো এমন বিশেষ কিছু পদ।
চাউম্যান
রাত-দিন বসে বসে খেলা দেখলে বেশি রগরগে খাবার খেতে ইচ্ছে না-ও করতে পারে। তখন বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন চিনা খাবার। আর চিনা খাবার মানেই চাউম্যান। আইপিএল উপলক্ষে চাউম্যান নিয়ে এসেছে তাদের বিশেষ লাঞ্চবক্স মেনু। ম্যাচ বাইট, মাশরুম পেপার সল্ট, আমেরিকান কর্ন পেপার সল্ট, ললিপপ, চিকেন তাইপেই। চাইলে নিরামিষ খাবারেরও বিকল্প পেতে পারেন। দামও সাধ্যের মধ্যেই।
আইপিএল উপলক্ষে চাউম্যান নিয়ে এসেছে তাদের বিশেষ লাঞ্চবক্স মেনু। ছবি- সংগৃহীত
বন্ধুর জন্মদিন জমে উঠুক ‘বাটারফিঙ্গার্স বাই প্রিতাঞ্জলি’র ম্যাঙ্গো কিউই ড্রাগন ফ্রুট কেক দিয়ে। ছবি- সংগৃহীত
বাটারফিঙ্গার্স বাই প্রিতাঞ্জলি
বিভিন্ন উৎসব, খেলা উদ্যাপনের মধ্যেই যদি কোনও বন্ধুর জন্মদিন পড়ে কেক তো লাগবেই। পাড়ার দোকানে নানা রকম কেক তো পাওয়া যায়, কিন্তু বাটারফিঙ্গার্স-এর ম্যাঙ্গো কিউই ড্রাগন ফ্রুট কেক, ম্যাঙ্গো আর্ল গ্রে কেক, চকোলেট ফ্রেশ অরেঞ্জ কেক, ম্যাঙ্গো টার্ট, চকোলেট হুইস্কি কেকের স্বাদ যদি এক বার চেখে দেখতে পারেন, সে ক্ষেত্রে অন্য দোকানের কেক আর মুখে উঠবে না। তবে এ ক্ষেত্রে আগে থেকে অর্ডার না দিলে কেক পাওয়া মুশকিল।
দ্য ওয়েস্ট ইন
খেলা তো আছেই সঙ্গে রয়েছে ইস্টারও। তাই কলকাতার দ্য ওয়েস্ট ইন তাদের বিশেষ মেনুতে যোগ করেছে বার্গন ইস্টার চিকেন, রোস্টেড লেগ অফ ল্যাম্ব, ডেভিল্ড এগ উইথ বেঙ্গল শ্রিম্প, ক্লাসিক ক্যারট কেক, ইস্টার কাপ কেক। বিশেষ এই রান্নাগুলি চেখে দেখতে গেলে এক বার ঢুঁ মারতেই হবে এই রেস্তরাঁয়।
খেলা, ইস্টার, পয়লা বৈশাখ বা রমজ়ান, ‘জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট’-এর কবাব দিয়ে হোক উদ্যাপন। ছবি- সংগৃহীত
জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট
খেলা, ইস্টার, পয়লা বৈশাখ এবং রমজ়ান। ধর্ম যা-ই হোক, খাবার ছাড়া উদ্যাপন হয় না। তাই ম্যারিয়ট তাদের বিশেষ মেনু সাজিয়েছে হালিম, বিরিয়ানি, কবাব থেকে শুরু করে ফিশ টিক্কা, মুর্গ হান্ডি লাজ়িজ়। পাশাপাশি, ইস্টার উপলক্ষে থাকছে স্টার ফ্রায়েড চিকেন উইথ ওয়েস্টার সস, ফিশ ইন বাটার গার্লিক সস, রোস্টেড টার্কি, গ্রিল্ড চিকেন উইথ রুট ভেজিটেবল, গোল্ডেন এগ, নেস্ট। এই সব খাবারের স্বাদ নিতে গেলে ২১ এপ্রিলের মধ্যে চলে যেতে হবে বাইপাসের ধারের জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলে।
ফেয়ারফিল্ড বাই ম্যারিয়ট
অনেকেই আবার তাইল্যান্ডের রান্নাবান্না চেখে দেখতে পছন্দ করেন। কলকাতায় বসে এমন খাবারের স্বাদ দিতে পারে ফেয়ারফিল্ড বাই ম্যারিয়ট হোটেল। সেখানে চলছে তাই খাবারের উৎসব। কুয়ে তিউ রড না, সাগো স্টিকি রাইস, তাই চিকেন স্যঁতে উইথ পিনাট সস, টম ইয়াম গুং, টম খা চেখে দেখা যায় সেখানে।
ইডাব্বা
ক্লাউড কিচেন দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ইডাব্বা এ বার রেস্তরাঁ রূপে আত্মপ্রকাশ করল। বাইপাসের ধারে ‘কুইক সার্ভিস রেস্তরাঁ’ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল ইডাব্বা। ১২টি আসন বিশিষ্ট এই রেস্তরাঁয় রয়েছে ভারতীয়, চিনা এবং প্রাচ্যের লোভনীয় নানা পদ। ভেজ সেজ়ুয়ান মম্স, ফ্রায়েড রাইস ওক বক্স, ভেজ থুকপা, চিলি চিকেন থালি, ভেজ দম বিরিয়ানি, এগ চিকেন হাক্কা নুডল্স, বাসমতি পোলাও, বাটার চিকেন পকেট নান— কী নেই সেখানে! এ সব খাবার খেতে যে প্রচুর খরচ হবে, এমনটাও নয়। সাধ্যের মধ্যে খানাপিনা সারতে হলে এক বার ঘুরে আসতেই পারেন সেখান থেকে।
দ্য কান্ট্রি হাউজ় ক্যাফে
অনেক রাত পর্যন্ত খেলা দেখে সকালে উঠে কিছু রান্না করতে ইচ্ছে না করলে চলে যান এলগিন রোডে দ্য কান্ট্রি হাউজ় ক্যাফেতে। তাদের রেস্তরাঁ সেজে উঠেছে প্রাতরাশের রকমারি সম্ভার নিয়ে। ক্যাপ্রিসি ক্রোসো স্যান্ডউইচ, স্ম্যাসড অ্যাভোকাডো অন টোস্ট, চকো চিপ্স কুকি শেক, দ্য কান্ট্রি হাউজ় স্পেশাল কোল্ড ব্রু, বাস্ক চিজ় কেক, অ্যাপল সিনামন ক্রেপ, বিস্কফ প্যানকেক। যা চাই, তা-ই পাবেন। শুধু কষ্ট করে পৌঁছে যেতে হবে।