পরিচিত মোচা, ভেটকি, চিংড়ি, কাঁচা আম দিয়েই তৈরি হচ্ছে অচেনা স্বাদ। নববর্ষ উপলক্ষে সেজেছে নতুন মেনু। নিজস্ব চিত্র।
সরু চাকলি হারিয়েই যেতে বসেছিল। তিনি ফিরিয়ে আনলেন। নতুন রূপে। সঙ্গে আনলেন বাঙালি সুশি। ঠিকই পড়েছেন। তাঁর সুশি একেবারে ভেতো বাঙালি মেজাজের। জাপানি কায়দার কাঁচা মাছটাছ থাকছে না। নাক সিঁটকোনোর ব্যাপার নেই।
মুম্বইয়ের শেফ। আদতে বাঙালি। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে উড়ে এসেছেন নিজের কলকাতায়। আটপৌরে বাঙালি স্বাদে এনেছেন টুইস্ট। জেন জ়ি বাঙালিকে মোচার ঘণ্ট খেতে শেখাচ্ছেন নতুন কায়দায়। ককটেল চাইলে তাতেও থাকছে বাংলার মা-ঠাকুরমার হাতের ছোঁয়া।
আটপৌরে বাঙালি স্বাদে টুইস্ট এনেছেন শেফ অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণত কলকাতার বাইরের অনেককেই মাছ-ভাত খাইয়ে থাকেন। তবে কলকাতার বাঙালিকে ঘরোয়া খাবার খাইয়ে হতাশ করেন না। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় বলেন, ‘‘কলকাতায় এসে তো আর সাবেক ইলিশ সর্ষে, চিংড়ি মালাইকারি খাওয়ালে চলে না। একটু নতুন কিছু তো করতে হবে। তবে বাঙালি রান্নার পরিচিত সব সরঞ্জাম ব্যবহার করেও যে নতুন কিছু তৈরি করা যায়, তা দেখাতে ইচ্ছা করল। তাই ভাবনাচিন্তা করে মেনু সাজালাম।’’
নববর্ষ উপলক্ষে পার্ক স্ট্রিটের ‘এলএমএনওকিউ’-তে থাকছে রকমারি রান্না। সবটাই অনন্যার তত্ত্বাবধানে তৈরি। শুরুতেই ঘুগনির টার্ট, মোচার ফিঙ্গার। সেই ফিঙ্গারের সঙ্গে আবার বাঙালি ডিপ। তৈরি কাঁচা আম, লঙ্কা বাটা আর কাসুন্দি দিয়ে।
আমসত্ত্ব আর চালের পায়েস দিয়ে অনন্যা তৈরি করেছেন আম্রপালি সুশি। নিজস্ব চিত্র।
পরতে পরতে বাঙালিয়ানার নতুন স্বাদ তৈরি হবে অনন্যার হাতে। সরু চাকলি দিয়ে কষা মাংস, পোস্ত পোড়া ভেটকি, মাছের গঙ্গা-যমুনা— রয়েছে নানা ধরনের রান্না।
শেষপাতেও আছে চমক। আমসত্ত্ব আর চালের পায়েস দিয়ে তৈরি করেছেন আম্রপালি সুশি। চেখে দেখা যায় মিষ্টি দইয়ের মুজ়ও।
এ সবের সঙ্গে আছে মানানসই ককটেলও। শতভি বসুর যত্নে তৈরি কাসুন্দি জিন ফিজ়, আমসত্ত্ব হুইস্কি সার, চাটনির মার্গারিটা গ্রীষ্মের দুপুরে গলা ভেজানোর জন্য আদর্শ।
আগামী ১৬ তারিখ পর্যন্ত রেস্তরাঁয় গেলেই মিলবে অনন্যার রান্না। যে কোনও দুপুর কিংবা সন্ধ্যায় গিয়ে চেখে দেখলেই হয়।