শীতকালে কি গরমের মতোই সানস্ক্রিন মাখতে হবে? ছবি:ফ্রিপিক।
দিনের বেলা বাইরে বেরোলে সানস্ক্রিন মাখার পরামর্শ দেন ত্বকের চিকিৎসক থেকে রূপটান শিল্পীরা। গরমে চড়া রোদে বেরোনোর আগে অনেকেই মনে করে সানস্ক্রিন মাখেন। কিন্তু ভুলটা হয় শীতে। এমন মরসুমে রোদ মিঠেই লাগে। শীতের সকালে রোদের তাপ সে ভাবে টেরই পাওয়া যায় না। ফলে কেউ সানস্ক্রিন মাখতেই ভুলে যান, কেউ আবার প্রয়োজন নেই ভেবে এড়়িয়ে যান। কিন্তু সত্যিই কি এমনটা করলে চলে? গরমের মতোই কি শীতে নিয়ম করে সানস্ক্রিন মাখা জরুরি?
গুরুগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ত্বকের চিকিৎসক রুবেন ভাসিন পাসি বলছেন, ‘‘মরসুমের সঙ্গে তাপমাত্রার হেরফের যতই হোক না কেন, সানস্ক্রিন বছরভরই মেখে যেতে হবে। ইউভিবি রশ্মি শীতে খানিকটা দুর্বল হলেও ইউভিএ ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।’’
রোদ থেকে কী কী ক্ষতি হয় ত্বকের?
সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকের নানা ধরনের ক্ষতি হয়। কালচে ছোপ পড়ে, সান ট্যান দেখা দেয়। দীর্ঘ ক্ষণ রোদে থাকলে সান বার্নও হয়ে যায়। এ ছাড়া ত্বকে বলিরেখার সমস্যাও দেখা দেয়। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি মুখের স্বাভাবিক জেল্লাও কেড়ে নিতে পারে। শুধু বাইরের সৌন্দর্য নয়, ত্বকের অসুখ, বড়সড় ক্ষতিও হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে।
রোদ না থাকলেও কি মাখতে হবে?
শীতের দিনে রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন মাখতে হবে। কিন্তু যখন টানা মেঘলা আকাশ থাকে, রোদের দেখা মেলে না, তখনও কি সানস্ক্রিন মাখা ততটাই জরুরি? মুম্বইয়ের চর্মরোগ চিকিৎসক সাগর গুজ্জর বলছেন, রোদ না থাকলেও সূর্যের ক্ষতিকর ইউভিএ, ইউভিবি রশ্মি কিন্তু রয়ে যায়। ফলে, সানস্ক্রিন না মাখলে ত্বকের ক্ষতি হতেই পারে।
গরমের মতো শীতকালেও কি একই রকম ভাবে সানস্ক্রিন মাখতে হবে?
এমন প্রশ্ন অনেকেরই। কেউ কেউ ভাবেন, শীত বলে গরমকালের মতো বার বার সানস্ক্রিন ঘষার দরকার নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, চড়া রোদে থাকলে ২-৩ ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন মাখতে হবে। তবে তা কিছুটা নির্ভর করছে কোন ধরনের সানস্ক্রিন ব্যবহার হচ্ছে, তার উপর।’’ শীত বলে কম পরিমাণ সানস্ক্রিন মাখলে কিন্তু চলবে না। যতটা দরকার, ততটাই মাখতে হবে। চিকিৎসক রুবেন মনে করাচ্ছেন, বরফে ঢাকা পার্বত্য এলাকায় গেলেও কিন্তু সানস্ক্রিন ব্যবহার একই রকম জরুরি। বরফে ধাক্কা খেয়ে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি প্রতিফলিত হয়, যা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
কোন সানস্ক্রিন বেছে নেবেন?
প্রত্যেকের ত্বকের ধরন আলাদা। স্বাভাবিক ভাবে সানস্ক্রিনও বাছতে হবে সেইমতো। তা ছাড়া স্থানের উপরেও নির্ভর করে কোন ধরনের স্পেকট্রামের সানস্ক্রিন ব্যবহার জরুরি।
পিএ: সানস্ক্রিনের মোড়কে ‘পিএ’ বলে একটি বিষয় লেখা থাকে। এটি হল ইউভিএ থেকে সুরক্ষার মাত্রা। পিএ-র পাশে যোগচিহ্ন থাকে। যত বেশি যোগচিহ্ন, সুরক্ষার মাত্রাও হবে তত বেশি। তবে দৈনন্দিন ব্যবহারে তিনটি যোগচিহ্ন যুক্ত পিএ যথেষ্ট, বলছেন ত্বক নিয়ে চর্চাকারীরা।
এসপিএফ: সানস্ক্রিনে থাকে সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ। এসপিএফ ৩০, ৫০ এবং তারও বেশি হয়। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য ৩০ মাত্রারটি বেছে নিতে পারেন। তবে চড়া রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘোরাঘুরি করতে হলে বেশি মাত্রার এসপিএফ বেছে নিতে হবে।
ত্বকের ধরন: সাধারণত শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিমের মতো সানস্ক্রিন ভাল। আবার তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেলের মতো সানস্ক্রিন বেছে নিতে পারেন। তবে ত্বক অনুযায়ী কোন সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ভাল, সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।