ছবি: নিজস্ব চিত্র।
সারা বছরের অপেক্ষার অবসান। পুজো এসে গিয়েছে।
উৎসব যখন বাঙালির, তখন সাজগোজেরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। আশ্বিনের শারদপ্রাতে বাঙালির আলমারি জুড়ে নতুন পোশাকের ভিড়। পুজোর কোন দিন কোন পোশাকটি অঙ্গে উঠবে, সেই পরিকল্পনাও তৈরি। শুধু পুজো শুরু হওয়ার অপেক্ষা। বছরের এই কয়েকটি দিন জমকালো সাজগোজে জীবনেও যেন রং ফেরে। তবে পুজোয় শুধু নিজে সাজলে চলে না, অন্যকেও সাজাতে হয়। কাছের মানুষ, প্রিয়জনদের সাজিয়ে তোলার মধ্যেও রয়েছে আলাদা তৃপ্তি। না হলে সাজের সব আয়োজন যেন ফিকে হয়ে যায়। আনন্দবাজার অনলাইনের ‘আগমনী’ আড্ডার আসরেও পুজোর সাজের এই দিকগুলি নিয়ে কথা বললেন সৌরভ দাস, দর্শনা বণিক, তনুশ্রী চক্রবর্তী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং পায়েল সরকার।
ছোটবেলার পুজো মানেই বাবা-মায়ের দেওয়ার নতুন জামা পরে সারা দিন টইটই। বড়দের কিনে দেওয়া জামাকাপড় সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে হত। এর চেয়ে ভাল কোনও জামা যে হতে পারে না, তেমনই একটা বদ্ধমূল ধারণা ছিল। তেমনটাই বলছিলেন সৌরভ। সাজপোশাকের দিক থেকে সৌরভ ইন্ডাস্ট্রিতে শৌখিনী হিসাবে পরিচিত। তবে এখন শুধু নিজেকে সাজান না, পুজো এলেই প্রথমেই বাবা-মা, বোনের জন্য পোশাক কেনেন। এ বার পুজোয় অবশ্য সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী দর্শনাও। পুরীতে গিয়েছিলেন শুটিংয়ে। সেখান থেকেই মায়ের জন্য ইক্কত কিনে এনেছেন সৌরভ। কাছের মানুষেরা সাজলে তবেই নিজের সাজগোজের ব্যাপারে একটা বাড়তি উৎসাহ তৈরি হয় বলে জানালেন সৌরভ।
সৌরভের সঙ্গে একেবারে একমত তনুশ্রী। নিজে শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। পুজোয় রোজ তাই শাড়ি ছা়ড়া আর অন্য কিছু পরেন না। প্রচুর উপহারও পান। উপহার পেতে যেমন তিনি ভালবাসেন, তার চেয়েও বেশি পছন্দ করেন উপহার দিতে। পরিজনের জন্য যেমন আগেই উপহার কিনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি আগে গুনতাম যে, ক’টা নতুন জামা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে একটা কম হলেই মনখারাপ হয়ে যেত। তবে এখন নিজের চেয়েও কাছের মানুষদের সাজাতে বেশি ভাল লাগে।’’
পায়েলের ছোটবেলার পুজো মানেই মায়ের সঙ্গে থিয়েটার রোডের এসি মার্কেটে জামাকাপড় কিনতে যাওয়া। আড্ডার মাঝেই ছোটবেলায় ফিরে গেলেন নায়িকা। মা পছন্দ করে যে জামা কিনে দিতেন, সেটাই পুজোর সবচেয়ে সেরা প্রাপ্তি ছিল। অভিনয় করার পর থেকে ফ্যাশনে একটা বদল এসেছে। তবে এখন মায়ের সঙ্গে আর জামাকাপড় কিনতে যাওয়া হয় না। বরং তিনিই মাকে পুজোয় সাজান মনের মতো করে। পায়েল বলেন, ‘‘আমার মা সাজতে খুবই ভালবাসেন। তাই পুজোয় মাকে মনের মতো সাজাতে পারলেই আমার সাজ হয়ে যায়। তাতেই আমি খুশি।’’
অনিন্দ্যের ফ্যাশন সচেতনতাও ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ জনপ্রিয়। তবে অনিন্দ্যর ছোটবেলা কেটেছে ধর্মতলার এক দোকানের মাখন জিন্স পরে। কেমন সেই জিন্স? অনিন্দ্য বলেন, ‘‘এখনকার জিন্সের নকশা নিয়ে যতটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, তখন এ সব ছিল না। একেবারে মাখনের মতো মসৃণ ছিল।’’ বাবার হাত ধরে সেই জিন্স কিনতে যেতেন অনিন্দ্য। আর এখন বাবাকে হাত ধরে পোশাক কিনতে নিয়ে যান।