ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
বাজুবন্ধ। হঠাৎ করেই সাজগোজের আলোচনায় ঘুরে ফিরে উঠে আসছে ওই নাম। সৌজন্যে দক্ষিণী ছবির নায়িকা শোভিতা ধূলিপালা। দিন কয়েক আগেই বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী। আর বিয়ের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই তাঁর সাজগোজের অন্যতম সঙ্গী ছিল বাজুবন্ধ। যা শোভিতার নকশাহীন সাজপোশাককেও রাজকীয় বানিয়ে দিয়েছিল বলে মত ফ্যাশনবোদ্ধাদের।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
শোভিতার বিয়ের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন সাজে তাঁকে নানারকমের বাজুবন্ধ পরতে দেখে ওই গয়নার প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে শৌখিনীদের। বিয়ের মরসুমে কনেরা তো বটেই সাজগোজ করতে ভালবাসেন এমন বহু মহিলাই বাজুবন্ধের খোঁজ শুরু করেছেন। অলঙ্কারের দুনিয়ায় দর বেড়েছে বাজুবন্ধের।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
অথচ বাজুবন্ধ কোনও নতুন গয়না, তা নয়। সেই কোন প্রাচীন কাল থেকে মহিলারা তাঁদের সাজের জন্য বাজুবন্ধ ব্যবহার করে আসছেন। বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার দেওয়ালচিত্রেও মহিলাদের বাহুর উপরের অংশের গয়না বা বাজুবন্ধ পরার প্রমাণ রয়েছে। রাজা-রাজরাদের কাছে তো বাজুবন্ধ ছিল নিত্য পরিধানের অঙ্গ। রানিরা তো পরতেনই, রাজারাও তাঁদের জমকালো জোব্বার উপরে পরতেন রত্নখচিত বাজুবন্ধ।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
বাজুবন্ধকে মনে করা হত, ক্ষমতা, সমৃদ্ধি এবং রাজকীয়তার প্রতীক। যদিও মেয়েদের বাহুর উপরের অংশে গয়না পরার চল শুধু রাজ পরিবারে নয়, এদেশের আদিবাসীদের মধ্যেও চালু ছিল। মেয়েরা পুঁতি, হাড়, পাথর, ফুল, এমনকি, ধাতুর তৈরি বাজুবন্ধও বানিয়ে পরতেন।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কিন্তু পরবর্তীকালে যখন বাহুল্যবর্জিত সাজগোজের ঢেউ উঠল তখন বাজুবন্ধের মতো ঐতিহ্যবাহী গয়না পরার চল উঠে যায়। দক্ষিণী বিয়েতে বাজুবন্ধ কিছুটা বিয়ের ঐতিহ্যবাহী সাজগোজের মধ্যে পড়ে। কর্নাটকের কন্যা ঐশ্বর্য রাই তাঁর বিয়েতে এক হাতে বাজুবন্ধ পরেছিলেন। কিন্তু ইদানীং সেখানেও ওই গয়না পরার চল কমেছে। শোভিতার আগে বহু দক্ষিণের নায়িকারই বিয়ের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। তার মধ্যে দীপিকা পাড়ুকোন, নয়নতারা, অদিতি রাও হায়দারির মতো নায়িকারাও রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কাউকেই বাজুবন্ধ পরতে দেখা যায়নি।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কিন্তু শোভিতার সাজগোজে বাজুবন্ধের ব্যবহার দেখে মুগ্ধ শৌখিনীরা। অনেকেই বলেছেন, বাজুবন্ধও যে ‘স্মার্ট’ গয়না হতে পারে তা শোভিতাকে দেখে বুঝতে পেরেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দক্ষিণের আরও এক নায়িকা কীর্তি সুরেশ সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন। বিয়ের সাজে, তাঁকেও দেখা গিয়েছে বাজুবন্ধ পরতে।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
তবে শোভিতার অনেক আগেই বাজুবন্ধ পরে খবরে এসেছিলেন দেশের ধনকুবের পত্নী নীতা অম্বানী। গত মার্চেই কালো রঙের একটি জংলা বেনারসি শাড়ির সঙ্গে মুঘল আমলের একটি গয়নাকে বাজুবন্ধের মতো পরে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি।
ফ্যাশনবোদ্ধারা অবশ্য বলছেন, বাজুবন্ধ নিয়ে হইচইয়ের কারণ হল, ইদানীং ফ্যাশনের দুনিয়ায় শিকড়ের কাছে ফেরার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। পুরনো গয়না তাই নতুন করে মন কাড়ছে। তা ছাড়া বাজুবন্ধের মজা হল, ওই গয়না যখন তখন আপনি গলার হার হিসাবেও পরতে পারেন। আবার স্লিভলেস ব্লাউজ় পরার পরে হাত যদি ফাঁকা লাগে, তবে জড়িয়ে নিতে পারেন হাতেও।