ফাউন্ডেশনের সহজপাঠ। ছবি: সংগৃহীত।
রোজ অফিসে যাওয়ার আগে কিংবা বন্ধুর বাড়ির ঘরোয়া পার্টিতে কাজ চালানোর মতো মেকআপ করতে পারেন। বি বি ক্রিম, টিন্ট, প্রেস পাউডার মাখার ক্ষেত্রে অসুবিধা না হলেও কিছুতেই মুখে ফাউন্ডেশন মাখতে পারেন না। শখ করে মাখতে গেলেও মুখে কেমন যেন ছাপ ছাপ হয়ে থাকে। হাতের আঙুল না ব্লেন্ডার— কোনটি ব্যবহার করলে যে ঠিক হবে, তা-ও বুঝতে পারেন না। তবে রূপটান শিল্পীরা বলছেন, মেকআপ বেস হিসাবে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যেগুলি মেনে চললে ত্বকের সঙ্গে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে সমস্যা হবে না।
ফাউনন্ডেশন মাখার সঠিক পদ্ধতি:
১) মুখ পরিষ্কার করে নিয়েই ফাউন্ডেশন মাখলে হবে না। প্রথমে মুখের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য হাইড্রেটিং স্প্রে, মিস্ট কিংবা ময়েশ্চারাইজ়ার মাখতে হবে। না হলে মেকআপ মুখে বসবে না, মসৃণও হবে না। মুখের বিভিন্ন অংশে খাপছাড়া ভাবে ফাউন্ডেশন লেগে থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
২) ত্বক যদি অতিরিক্ত শুষ্ক হয়, সে ক্ষেত্রে সরাসরি মুখে ফাউন্ডেশন মাখা উচিত নয়। প্রয়োজন বুঝে যে কোনও ধরনের ফেশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিলে মেকআপ ভাল বসবে। আবার, তৈলাক্ত ত্বক হলে অনেকেই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সামান্য জল মিশিয়ে নেন।
৩) চোখের কোণ বা নাকে, ঠোঁটের চারধারে কনসিলার মাখার আগে ফাউন্ডেশন মেখে নিন। অনেকেই ফাউন্ডেশন মাখার পর কনসিলার ব্যবহার করেন। সে ক্ষেত্রে মুখে ফাউন্ডেশন এবং কনসিলার ব্লেন্ড করা কঠিন হবে।
৪) মুখে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার জন্য ব্রাশ ব্যবহার করেন পেশাদার রূপটান শিল্পীরা। অনেকেই আবার আঙুলের সাহায্যে মুখে মেকআপ বসিয়ে নেন। তবে ফাউন্ডেশন ভাল ভাবে যাতে মুখে মিলিয়ে যায়, সে জন্য ভিজে স্পঞ্জ বা ব্লেন্ডার ব্যবহার করাই শ্রেয়।
৫) ফাউন্ডেশন মাখার পর, মেকআপ সেট করার পাউডার বা ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার মেখে নিন। একেবারে শেষ পর্বে পৌঁছনোর আগে ব্লাশ, ব্রোঞ্জার এবং সবশেষে হাইলাইটার মেখে নিয়ে অতিরিক্ত পাউডার ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে ফেলুন।
৬) শুধু মুখে ফাউন্ডেশন মাখলে গলা এবং ঘাড়ের অংশে চামড়ার আসল রং দেখা যায়। মেকআপ সম্পূর্ণ করতে এই অংশগুলি বাদ দিলে চলে না। কানের লতিতেও হালকা করে ফাউন্ডেশনের পরত দিতে পারেন।
ত্বক যদি অতিরিক্ত শুষ্ক হয়, সে ক্ষেত্রে সরাসরি মুখে ফাউন্ডেশন মাখা উচিত নয়। ছবি: সংগৃহীত।
৭) ফাউন্ডেশন এবং ফেশিয়াল অয়েলের পরিমাণ কেমন হবে, তা নির্ভর করবে ত্বকের ধরনের উপর। শুষ্ক ত্বক হলে দুই-তিন ফোঁটা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে তিন-চার ফোঁটা অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে বিষয়টা উল্টো। তিন-চার ফোঁটা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে দু’এক ফোঁটা অয়েল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
ফাউন্ডেশন মাখার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলি এড়িয়ে চলবেন?
১) প্রথমেই বেশি পরিমাণে ফাউন্ডেশন নেবেন না। না হলে মুখ পুরো সাদা হয়ে যাবে। ‘ন্যাচারাল লুক’ না এলে দেখতেও ভাল লাগবে না।
২) ফাউন্ডেশন কেনার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে। ত্বকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে ফাউন্ডেশন না কিনলে কিন্তু বিপদ।
৩) ব্রাশ, স্পঞ্জ বা আঙুল, যা দিয়েই ফাউন্ডেশন মাখুন না কেন, তা মাখার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। মুখে ক্রিম মাখার মতো দু’হাতের তালু দিয়ে যেমন খুশি রগড়ে নিলে কিন্তু হবে না।
৪) যদি প্রয়োজন পড়ে, তবেই কনসিলার ব্যবহার করুন। পেশাদার রূপটান শিল্পীরা কনসিলার ব্যবহার করেন বলেই আপনাকে করতে হবে, এমন নয়।
৫) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ফাউন্ডেশন মাখছেন। কিন্তু, নিজের মুখে পর্যাপ্ত আলো এসে পৌঁছচ্ছে না। তা হলে কিন্তু মুখের সর্বত্র সমান ভাবে ফাউন্ডেশনের প্রলেপ পড়বে না। কোথাও বেশি, কোথাও কম ফাউন্ডেশন মাখলে মুখ একেবারে ভূতের মতো দেখাবে।