ভেষজ গুণ থাকায় নানা ফেসপ্যাকেই হলুদ মেশানো যায়। ছবি: সংগৃহীত
রান্নার একটি অপরিহার্য উপাদান হল হলুদ। এ বিষয়ে যেমন কোনও মতদ্বৈত নেই। তেমনই শরীরের যত্ন নিতেও হলুদের জু়ড়ি মেলা ভার। এ নিয়েও কোনও সন্দেহ নেই। সারা বছর সুস্থ থাকতে যে জিনিসটির উপরে চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখতে পারেন, তা হল হলুদ। হেঁশেলের এই অতি পরিচিত জিনিসটির গুণ অনেক। ত্বকের যত্ন থেকে শরীরের দেখভাল— সবতেই সিদ্ধহস্ত হলুদ। শীত পড়লেই শরীরে হজমক্ষমতা একটু কমজোড়ি হয়ে পড়ে। পেটের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে থাকে। শীত মানেই উৎসব, বিয়েবাড়ি। ফলে তেল-মশলাদার খাবার খাওয়া হয়েই যায়। চিকিৎসকরা এ সময়ে একটু বুঝেশুনে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে হজমক্ষমতা বাড়ানোর উপায় রয়েছে হেঁশেলেই।
হলুদের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান হজমক্ষমতা বাড়ায়। এ ছা়ড়া, শরীরের সব রকম প্রদাহ কমানোরও ক্ষমতা রাখে হলুদ। তবে শুধু শরীর নয়, ত্বকের যত্নেও হলুদের ভূমিকা অনবদ্য। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে হলুদের রয়েছে অপরিসীম সাহায্য। হলুদ একে অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদানে সমৃদ্ধ। তার উপর তেলতেলে ত্বকের যত্নে এর প্রভাব বেশ অনেকটাই। ভেষজ গুণ থাকায় নানা ফেসপ্যাকেই হলুদ মেশানো যায়। অনেক রোগের ঘরোয়া সমাধানেও তাই কাজে লাগে হলুদ।
শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করা, ফাটা ঠোঁটের পরিচর্যা, ত্বকের দাগছোপ দূর— সবেতেই এই হলুদের ভূমিকা রয়েছে। ত্বক পরিচর্যায় কী কী ভাবে সাহায্য করে হলুদ?
তেলতেলে ত্বকের যত্নে এর প্রভাব বেশ অনেকটাই। প্রতীকী ছবি।
১) একটি পাত্রে এক চামচ চন্দনের গুঁড়ো, দু’চামচ লেবুর রস, এক চামচ বেসন ও এক চিমটে হলুদ মেশান। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে এই ফেস প্যাক খুব উপকারী।
২) মুসুরির ডাল বাটার সঙ্গে এক চিমটে হলুদ মিশিয়ে নিন। এ বার এই মিশ্রণটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে। সেই সঙ্গে ত্বকে আসবে বাড়তি ঔজ্জ্বল্য। সপ্তাহে তিন দিন এই প্যাক মাখলে সহজেই ব্রণর সমস্যা কমবে অনেকটা।
৩) শীতে ফাটা ঠোঁটের হাত থেকে বাঁচতে চিনি, হলুদ ও মধুর মিশ্রণ ঠোঁটে মেখে পাঁচ মিনিট রাখুন। শীতে নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে ফাটা ঠোঁটের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি মিলবে।
৪) চোখের নীচের কালি দূর করতেও ভরসা হতে পারে হলুদ। একটি পাত্রে হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে নিন অল্প টক দই ও দু ফোঁটা মধু। প্রতি দিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণ মাখুন চোখের নীচে। শুকিয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে নিন। কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলেই চোখের নীচের কালি চলে যাবে। কাঁচা হলুদ বাটা ত্বকের কালো দাগের উপর মাখলে দাগ সরে দ্রুত। দ্রুত সুফল পেতে এর সঙ্গে দু’চামচ দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। উপকার পাবেন।