কম বয়সেই চুল পাকছে? অকালপক্বতা রোধে মেখে দেখতে পারেন আয়ুর্বেদিক তেল। ছবি: ফ্রি পিক।
কলেজে প্রথম বর্ষে পড়েন রিয়া। আচমকা মাথায় দু’টি পাকা চুল দেখতে পেয়ে, তাঁর আর চিন্তার শেষ নেই। তবে কি এ বার সমস্ত চুলেই পাক ধরবে? বয়স হলে চুলে পাকবে জানা কথাই। কিন্তু অনেকের কৈশোরেও পাকা চুল দেখা যায়। চুলের এই অকালপক্বতার নানা কারণ থাকতে পারে। যেমন অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, লিভারের গোলযোগ, বংশগত কারণ, অতিরিক্ত ধূমপান, দূষণ, শারীরিক কোনও সমস্যা।
পাকা চুল ঢাকার সহজ উপায় আছে। রং করে নেওয়া। কিন্তু রাসায়নিক মিশ্রিত রং ব্যবহার করলে, চুলের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া এটা কোনও সমাধানও নয়। বরং কম বয়সে চুল পাকা রুখতে ব্যবহার করতে পারেন আয়ুর্বেদিক তেল।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রোগ সারানো থেকে চুলের সমস্যা সমাধানে বহুবিধ ভেষজের ব্যবহার হয়। আমলকি, ভৃঙ্গরাজ, জবার ব্যবহার আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু দিন ধরেই চলে আসছে।
আমলকি
আমলকি ভিটামিন ই তে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রচুর খনিজ। চুল ঝরা বন্ধ করতে, চুলের গোড়া মজবুত করতে, অকালপক্বতা রোধে আমলকির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
ভৃঙ্গরাজ
চুলের পরিচর্যায় প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার করা হয় ভৃঙ্গরাজ। আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম-সহ আরও বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ ভৃঙ্গরাজ চুলের শুষ্কতা, অকালপক্বতা, খুশকি দূর করতে অব্যর্থ।
জবার তেল
জবা ফুলের মধ্যে অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি চুলে কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। ফলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে, চুলের গোড়া মজবুত হয়। জবাতে রয়েছে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি। চুলের প্রাকৃতিক জেল্লা ধরে রাখে। ফলিকলগুলিও পুষ্টি পায়।
তিন তেলের মিশ্রণ
তবে অকালপক্কতা রোধে বিশেষ সহায়ক হতে তিন উপাদানের মিশ্রণে তৈরি আয়ুর্বেদিক তেল। আমলকি, ভৃঙ্গরাজ ও জবার তেলের মিশ্রণে শুধু কম বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে না, চুল ঝরা, ডগা ফাটা-সহ একাধিক সমস্যার সমাধান হবে। মিলবে একঢাল কালো চুল। এই তিন উপকরণের মিশ্রণে তৈরি বাজারচলতি আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করতে পারেন।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন
প্রতি দিন এই তেল ব্যবহার করতে হবে। চিরুনি বা হাত দিয়ে চুলগুলি ভাগ করে নিয়ে, গোড়ায় কয়েক ফোঁটা তেল দিতে হবে। তার পর হালকা হাতে মালিশ করতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে মাথার তালুতে মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে। এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে। আয়ুর্বেদিক তেলের গুণে ঠেকানো যাবে অকালপক্বতা । একটি-দু’টি পাকা চুল দেখা গেলেই যদি এ ভাবে তেল ব্যবহার করা যায়, তা হলে দ্রুত সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
পুষ্টি
তবে শুধু তেলের গুণেই সম্পূর্ণ কাজ হবে না। পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়াও জরুরি। ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ শাকসব্জি ও ফল রাখতে হবে পাতে। পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়াও জরুরি।