ওয়্যাক্স করানোর পরেই ‘ইনগ্রোন হেয়ার’ হয়? ছবি: সংগৃহীত।
পুজোর সময়ে সালোঁয় যাওয়ার সুযোগ হয়নি। ঠাকুর দেখতে যাওয়ার আগে চটজলদি রোম তুলতে বাড়িতে শেভিং করেছিলেন। কম সময়ে, অল্প খরচে কাজ হাসিল করতে শেভিংয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু, তাতে সমস্যাও রয়েছে। ক’দিন পর থেকেই ত্বকের উপরের স্তরে কুণ্ডলী পাকানো রোম নিয়ে যথেষ্ট ঝক্কি পোহাতে হয়। পোশাকে খোঁচা লাগে, নিজের অমসৃণ ত্বকে হাত দিতেও অস্বস্তি বোধ হয়। তার চেয়েও অসুবিধার হল, অনাবৃত অংশে এমন কালচে ছোপ পড়ে যে, ছোট ঝুলের বা হাতকাটা পোশাক পরতেও অস্বস্তি হয়।
ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ওয়্যাক্সিং বা শেভিংয়ের পর আবার রোম গজাতে শুরু করলে যদি তা ত্বকের উপরিভাগে আসতে বাধা পায়, তা হলে সেগুলি ত্বকের ভিতর ভিতর বাড়তে থাকে। এই অবস্থাকেই ‘ইনগ্রোন’ বলা হয়। কখনও কখনও দীর্ঘ ক্ষণ ত্বকের সঙ্গে সেঁটে থাকা পোশাক পরলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই কুণ্ডলী পাকানো রোম কিন্তু কোনও কোনও সময়ে বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে। ব্যাক্টেরিয়ার কারসাজিতে ত্বকে সংক্রমণও হতে পারে। তবে এই ধরনের সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পেতে রোম তোলার আগে এবং পরে কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হবে।
শেভিং করার চেয়ে ওয়্যাক্সিং ভাল
ওয়্যাক্সিং কিংবা শেভিং— দু’টি ক্ষেত্রেই ‘ইনগ্রোন হেয়ার’ বা ত্বকের উপরিভাগে কুণ্ডলীকৃত রোমের সমস্যা হতে পারে। তা সত্ত্বেও ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ওয়্যাক্সিং ভাল। কারণ, শেভিং করলে ত্বকের উপরিভাগ থেকে রোম চেঁছে নেওয়া হয়। কিন্তু ওয়্যাক্সিং করলে রোম একেবারে গোড়া থেকে উঠে আসে। ফলে রোমের ঘনত্ব যেমন কমে, তা ‘ইনগ্রোন’ হওয়ার আশঙ্কাও খানিকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
রাসায়নিক দেওয়া এক্সফোলিয়েটরও ব্যবহার করতে হবে
এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পেশাদার সালোঁ কর্মীরা ওয়্যাক্স বা শেভিং করার আগে এবং পরে এক্সফোলিয়েট করার পরামর্শ দেন। ত্বকের উপরিভাগের মৃত কোষ উঠে গেলে, রোমকূপও পরিষ্কার হয়ে যায়। তখন রোম বেড়ে উঠতে বাধা পায় না। ত্বক মসৃণ রাখতে অনেকেই ঘন ঘন ওয়্যাক্স করান। ওয়্যাক্সের ক্ষেত্রে অন্তত পক্ষে ৪ সপ্তাহের ব্যবধান রাখা জরুরি। ত্বকের অবস্থা খুব খারাপ হলে প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটরের বদলে রাসায়নিক দেওয়া এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করতে পারেন। ল্যাক্টিক, গ্লাইকোলিক বা স্যালিসিলিক অ্যাসিড-যুক্ত এক্সফোলিয়েটর ‘ইনগ্রোন হেয়ার’-এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কার্যকর।
ছবি: সংগৃহীত।
সঠিক ভাবে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে
রোম তুলে ফেলার পর ত্বকের আর্দ্রতা অনেকটা কমে যায়। তাই বেশি করে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখতে হবে। বিশেষ করে স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েট করার পর ত্বকের নিজস্ব তেল বা সেবাম ক্ষরণ কমে আসে। ত্বকও খসখসে হয়ে যায়। এই কারণেও ত্বকে ইনগ্রোন হেয়ার দেখা দিতে পারে। ওয়্যাক্সিং করার পর ঘন ময়েশ্চারাইজ়ারের প্রলেপ এই ধরনের সমস্যা রুখে দিতে পারে।
ইনগ্রোন হেয়ার খোঁটা যাবে না
ত্বকে ব্রণ, ফুস্কুড়ি জাতীয় কিছু দেখলেই অনেকে খুঁটে ফেলেন। ত্বকের ভিতর এই ধরনের কিছু দেখলে ত্বকের উপরিভাগের চামড়া খুঁটে তুলে, সেখান থেকে কুণ্ডলী পাকানো ছোট ছোট রোমগুলি টেনে তুললে ফলিকলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু তা-ই নয়, সেখান থেকে ত্বকে সংক্রমণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সংক্রমণের ফলে ত্বকে যদি কোনও দাগ হয়ে যায়, তা সহজে দূর হতে চায় না।
লেজ়ার পদ্ধতিতেও রোম তুলতে পারেন
রোম তুলতে ওয়্যাক্সিং এবং শেভিং ছাড়াও ইদানীং আরও একটি পন্থা বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তা হল ‘লেজ়ার হেয়ার রিমুভাল’। ওয়্যাক্সিং বা শেভিংয়ের চেয়ে ত্বকে তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। ওয়্যাক্সিং করালে রোমের ফলিকলে চাপ পড়ে, স্নায়ুতে আঘাত লাগার আশঙ্কাও থেকে যায়। লেজ়ার করালে কিন্তু সেই ভয় নেই।