অম্বানী ঘরনী রাধিকার সাজ কী শেখাল? ছবি: সংগৃহীত।
সদ্য সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন ধনকুবের অম্বানী পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানী। অনন্ত ও রাধিকার বিয়ে যেন রূপকথার মতোই। প্রাক্-বিবাহ, গায়েহলুদ, বিয়ে, আশীর্বাদ, বৌভাত-সহ প্রতিটি অনুষ্ঠানের জাঁকজমক ছিল চোখধাঁধানো। পোশাকের বহর, গয়নার কারিকুরি, সাজসজ্জার ভাবনা সবেতেই রয়েছে দীর্ঘ ভাবনা, পরিশ্রম। অবশ্যই এ বিয়ের মধ্যমণি বর ও কনে। শুধু কনের সাজে নয়, বিয়ের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তন্বী চেহারার, বুদ্ধিদীপ্ত রাধিকা মার্চেন্ট সকলের নজর কেড়েছেন। কখনও ঝলমলে পোশাকে তিনি মোহময়ী, কখনও একেবারে হালকা রূপটানে কনের নিজস্ব সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব ঝলমলিয়ে উঠেছে। অলঙ্কার থেকে কেশবিন্যাস, সবেতেই পারিপাট্য, ভাল লাগার ছোঁয়া।
রাধিকার সাজসজ্জা থেকে শিক্ষণীয় কী?
ঐতিহ্য
অলঙ্কার থেকে পোশাক, সবেতেই কিন্তু রাধিকার পোশাকে ফুটে উঠেছে আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেল। মিশেছে সাবেকিয়ানা। গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে রাধিকার সাজ ছিল ফুলেল। দামি মণি-মুক্তের দ্যুতি নয়, রাধিকার পরনে ছিল ফুলের বুননে এক অপরূপ ওড়না। আবার বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময় রাধিকা সেজেছিলেন মণীশ মলহোত্রর পোশাকে। সে দিন রাধিকার লেহঙ্গায় ছিল বেনারসির ছোঁয়া।
সাবেকি বেনারসি নতুন রূপ পেয়েছিল পোশাকশিল্পীর ভাবনায়। আর তাতেই রাধিকা হয়ে উঠেছিলেন আরও সুন্দরী। সুতরাং ফ্যাশন মানেই সাবেক সাজ, শাড়িকে বর্জন করা নয়, বরং তার সঙ্গে আধুনিকতার মিশেল, সেটা প্রমাণ করেছে রাধিকার সাজ।
নিজস্ব সৌন্দর্য
বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষ সাজ মানেই যে রূপটানের আতিশয্য নয়, সেটাও দেখিয়েছেন রাধিকা। বিয়ে ও বৌভাতে রাধিকার সাজ যেমন মানানসই ছিল, তেমনই বিবাহ পর্বের প্রতিটি ধাপেই রাধিকার নিজস্ব সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। বৌভাত শেষে প্রথম বার স্বামী অনন্তের সঙ্গে জামনগরে গিয়েছেন রাধিকা। গোলাপি সালোয়ারের সঙ্গে চর্চায় উঠে এসেছে নতুন কনের প্রসাধনী ছাড়া রূপ। তাঁর ত্বকের নিজস্ব দ্যুতি রয়েছে। রাধিকার সাজ শিখিয়েছে, শুধু মাত্র রূপটানেই কাউকে সুন্দর লাগতে পারে না, ত্বক, চুল ও শরীরও সুস্থ থাকা প্রয়োজন। সঠিক যত্ন দরকার ত্বকের ।
অলঙ্কার
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাজপোশাকের সঙ্গে অলঙ্কারের যোগ্য সঙ্গতও নজর কেড়েছে রাধিকার সাজে। কখনও গলাভর্তি ভারী গয়না, কখনও হালকা ফুলের সাজ।
তাঁর গলায় কখনও শোভা পেয়েছে রাজস্থানের পোলকি গয়না, কখনও আবার পারিবারিক ঐতিহ্য জুড়ে থাকা অলঙ্কার। কখনও সেই অলঙ্কারে ছিল আধুনিকতা, কখনও আবার পারিবারিক গয়না পরে তিনি হয়ে উঠেছেন অনন্যা। ফ্যাশন মানেই পুরনোকে বর্জন নয়, বরং ঐতিহ্যকে সুন্দর ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া; তা-ও ফুটে উঠেছে ‘রূপকথার’ এই বিয়েতে।
কেশসজ্জা
কখনও খোলা চুলে হালকা ঢেউ খেলেছে, কখনও আবার খোঁপায় রূপ খুলেছে রাধিকার। কখনও গয়নায় সেজেছে তাঁর খোঁপা, কখনও তাতে যুক্ত হয়েছে ফুলের সাজ। সাধারণ খোঁপাতেও রাধিকাকে রাজকন্যা মনে হয়েছে। ভীষণ জরুরি হল সাজপোশাকের সঙ্গে চুলের সঠিক বিন্যাস। সেই সঙ্গে রুচিবোধ। নিজস্বতা।
স্নিগ্ধতা
বিয়ের অনুষ্ঠানে প্যাস্টেলরঙা লেহঙ্গায় যেমন রাধিকার ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠেছে, তেমনই সাদা শাড়ি, গোলাপি ব্লাউজ়, খোলা চুলে সেই রাধিকার স্নিগ্ধ রূপও ধরা পড়েছে। অম্বানী পরিবারে গৃহশান্তির জন্য পূজায় রাধিকাকে মনে হয়েছে কোনও সাধারণ পরিবারের বধূ। যদিও সাবেক শাড়ির সঙ্গে উজ্জ্বল গয়নায় তাঁকে লাগছিল আরও সুন্দর।
সৌন্দর্যের অর্থ শুধু বাহ্যিক নয়, অন্তরের সৌন্দর্যও গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে মিশে থাকে কোনও একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব, ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি। অর্থ ও প্রতিপত্তি থাকলেই যে সমস্ত সাজে তার প্রতিফলন থাকতেই হবে এমনটা নয়, বরং যে অনুষ্ঠানে যে পোশাক, যে অলঙ্কার ঠিক যতটা মানায়, ততটাই ব্যবহার করা উচিত।