সোনালি এবং রুপোলি রঙের চাঁদ আর তারার সমাহার ছিল কিয়ারার কলিরেতে। ছবি: সংগৃহীত।
কিয়ারা আডবাণীর বিয়ের সাজ ছিল রাজকীয়। গোলাপি লেহঙ্গা থেকে হিরে-পান্নার গয়না, সবই চোখধাঁধানো। তবে সব সাজের মাঝে অনুরগীর নজর পড়েছে কিয়ারার চুড়ি থেকে ঝুলন্ত কলিরের দিকে।
পঞ্জাবি বধূদের মধ্যে বিয়ের সময়ে লাল চূড়ার সঙ্গে কলিরে পরার চল আছে। কিয়ারা থেকে আলিয়া, ক্যাটরিনা থেকে দীপিকা হালে সব বলিউড নায়িকার হাতেই দেখা গিয়েছে রকমারি কলিরে। বলিউডের বধূদের কলিরেতে থাকে নানা ভাবনার ছোঁয়াও। সোনালি এবং রুপোলি রঙের চাঁদ আর তারার সমাহার ছিল কিয়ারার কলিরেতে। প্রজাপতি, দম্পতির নামের আদ্যক্ষর, দু’জনের প্রিয় পর্যটনস্থল প্যারিসের আইফেল টাওয়ার এবং সিদ্ধার্থের সবচেয়ে প্রিয় পোষ্য ‘অস্কার’-এর মুখও শোভা পাচ্ছিল কলিরেটিতে। নবদম্পতির জীবনের প্রিয় মুহূর্তগুলির ঝলক যেন ধরা পড়ল সেই কলিরেতে।
ক্যাটরিনার কলিরেতে ছিল ‘ওম’। ছবি: সংগৃহীত।
বলিপাড়ার নায়িকারা এখন বিয়ের জন্য মনের মতো কলিরে বানাতে ছুটে যাচ্ছেন মৃণালিনী চন্দ্রের কাছে। কিয়ারার আগে আলিয়া ভট্ট, ক্যাটরিনা কইফ, আথিয়া শেট্টি, কাজল আগরওয়াল, রিচা চড্ডার হাতেও শোভা পেয়েছে তাঁর নকশা করা কলিরে। সব নায়িকার ক্ষেত্রেই তাঁদের পছন্দ-অপন্দকে গুরুত্ব দিয়েছেন শিল্পী। আলিয়ার কলিরেতে ছিল মেঘ, চাঁদ, তারা, ঢেউ, সূর্যমুখী ফুলের মিশেল। ক্যাটরিনার কলিরেতে আবার ছিল ‘ওম’, আথিয়ার কলিরেতে লেখা ছিল সংস্কৃত বাণী।
কলিরে এখন আর শুধু পঞ্জাবি বধূদের নয়। বলিউডের প্রিয় নায়িকাদের হাতে সে সব দেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কনেই এখন বিয়েতে কলিরে পরতে শুরু করছেন। পিছিয়ে নেই বাঙালি কনেরাও। সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখা যাবে, লাল বেনারসি আর শাখাপলার সঙ্গে তাঁরাও দিব্যি পরে ফেলছেন কলিরে। সাজেও আসছে অভিনবত্ব।
কাজল আগরওয়ালের হাতেও শোভা পেয়েছে তাঁর নকশা করা কলিরে।
পঞ্জাবিদের মধ্যে এই কলিরে নিয়ে বিয়ের সময়ে একটি মজার খেলাও খেলা হয়। নববধূর ভাই-বোন আর বন্ধুবান্ধবের মাথার উপর এই কলিরে নাড়াবেন। যাঁর গায়ে কলিরের অংশ খুলে পড়বে, ধরে নেওয়া হয় এর পরে বিয়ের পিড়িতে বসার পালা তাঁরই। বাঙালিদের মধ্যে অবশ্য সেই সব চল নেই। বাঙালি কনেদের কাছে বিষয়টি মূলত সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাজা।
আগে কেবল সাবেকি কলিরেই পাওয়া যেত বাজারে। এখন অবশ্য কলিরে নিয়ে হবু কনেদের মাতামাতির শেষ নেই। প্রিয় বলি অভিনেত্রীর মতো কলিরের খোঁজ করতে হন্যে হয়ে বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। কলিরের চাহিদাকে মাথায় রেখে কলিরে বানানোকেই পেশা করে নিচ্ছেন মৃণালিনীর মতো শিল্পীরা। কনেদের ভাবনা ও নিজের সূক্ষ্ম শিল্পভাবনা ফুটিয়ে তুলছেন কলিরের মাধ্যমে। কিয়ারার সাজ দেখার পর এই চাহিদা আরও বাড়বে, এমনই ধারণা অনেকের।
কলকাতায় কলিরে বলিউডের মতো ততটা জনপ্রিয় না হলেও এখন পাওয়া যায় অনেক জায়গাতেই। বড়বাজারে সত্য নারায়ণ এসি মার্কেট, নিউ মার্কেট, বরদান মার্কেটে ঢুঁ মারলেই পেতে পারেন নানা ধরনের নানা দামের কলিরে। এ ছাড়া, নিজের মনের মতো কলিরে বানাতে চাইলে ভরসা রাখতে হবে অনলাইন বিপণির উপর।