Health

সচেতন হলে সেরে যায় মনের অসুখও, বলল সভা

কখনও অভিভাবকের বকুনি খেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে সন্তান। কখনও আবার অফিসে কাজের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তিগত সম্পর্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

না ভাঙলে তৈরি হবে না নতুন কিছু! ‘ইন্ডিয়ান সাইকায়াট্রিক সোসাইটি’র বার্ষিক সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, মানসিক স্বাস্থ্যকে বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যের আলোচনা নিরর্থক। শনিবার ঘণ্টা দেড়েকের আলোচনাসভায় বক্তারা যা বললেন তার সারমর্ম হল, প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে মনের অসুখ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একজোট হতে হবে।

Advertisement

কখনও অভিভাবকের বকুনি খেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে সন্তান। কখনও আবার অফিসে কাজের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তিগত সম্পর্ক। এমন পরিস্থিতিতে রোগ নিরাময়ে সমাজের সর্বস্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধনের কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন মনোরোগ চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, আদতে রোগটা বহুমুখী। একাকিত্ব, অস্বাভাবিক চাপ, হতাশা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা— মন ভাল না থাকার উপাদান বহু। সভায় বক্তারা নিজেদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা থেকেই সমাধানসূত্রের দিক নির্দেশ করলেন।

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝানোর উপরে জোর দেন হৃদ্‌রোগ চিকিৎসক কুণাল সরকার। সেই সূত্রে মনের অসুখের চিকিৎসার সমস্যার দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেন এসএসকেএমের হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অভিজিৎ চৌধুরী। তিনি জানান, মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া নিয়ে সমাজের এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে কুণ্ঠা রয়েছে। অভিজ্ঞতার নিরিখে অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘গ্রামে দেখা যায়, পুরুষেরা বাড়ির বাইরে বেরোলে তবেই মহিলারা তাঁদের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। তাই বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মনোরোগের চিকিৎসাকে দেখতে হবে।’’

Advertisement

পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর মতে, সন্তানের একাকিত্ব, হতাশার পিছনে বাবা-মায়েদের আরও সজাগ হওয়া উচিত। কর্মব্যস্ত জীবনে সময়ের অভাবে সন্তানের সামনে মোবাইলের দুনিয়া খুলে দিচ্ছেন অভিভাবকেরা। পরে সেই মোবাইলই কাঁচা মনকে অসুস্থ করে তুলছে। সরকারের ভূমিকা যে সন্তোষজনক নয়, তা-ও আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। সভাগৃহে উপস্থিত প্রবাসী বাঙালি, মনোরোগ চিকিৎসক বারিদ ভট্টাচার্য জানতে চান, জিডিপি-র নামমাত্র অংশ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বরাদ্দ। তা দিয়ে কি প্রকৃত সমাধানসূত্র পাওয়া সম্ভব! পরে এ বিষয়ে লন্ডনের ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে বহির্বিভাগে গড়ে ৬০০-৭০০ রোগী দেখতে হচ্ছে ডাক্তারদের। তা হলে এক জন রোগীর জন্য কতটুকু সময় দিতে পারবেন তাঁরা?’’

সমবেত উদ্বেগকে সংসদে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন আলোচনাসভায় উপস্থিত তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার।

আলোচনাসভার সঞ্চালক, মনোরোগ চিকিৎসক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মনোরোগের নিরাময় সম্ভব। তার জন্য জনমানসে সচেতনতা বার্তা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে এ দিনের আলোচনা জরুরি ছিল।’’ সম্মেলনের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি চিকিৎসক গৌতম সাহার মতে, সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় যে সচেতনতা বেড়েছে, সেটাও সত্যি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement