ঝুম্পা লাহিড়ী। ছবি: সংগৃহীত।
প্যালেস্টাইন-বিতর্কের মাঝে নিউ ইয়র্কের এক সংগ্রহশালার দেওয়া পুরস্কার প্রত্যাখান করলেন আমেরিকার বাঙালি লেখিকা ঝুম্পা লাহিড়ী। সম্প্রতি পোশাকবিধি জারি করা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে নিউ ইয়র্কের ৪০ বছরের পুরনো নোগুচি মিউজ়িয়াম। প্যালেস্টাইন প্রতিবাদের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত কেফিয়ে স্কার্ফ পরায় সেখান থেকে বরখাস্ত করা হয় তিন কর্মীকে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ স্বরূপ ‘ইসামু নোগুচি ২০২৪’ পুরস্কার প্রত্যাখান করছেন পুলিৎজ়ার জয়ী ঝুম্পা।
গত মাসে শিল্পী ইসামু নোগুচির প্রতিষ্ঠিত এই সংগ্রহশালা কর্মীদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করে, কোনও রকম রাজনৈতিক বার্তা, স্লোগান অথবা প্রতীক বহনকারী পোশাক পরে কাজে আসা যাবে না। এই ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে সাদা-কালো কেফিয়ে স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে মিউজ়িয়ামে আসেন তিন কর্মী। যে স্কার্ফ প্যালেস্টাইন সংহতির প্রতীক হিসাবে পরিচিত বলে দাবি করা হয়েছে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের তরফে। তাঁদের দাবি, প্যালেস্টাইনের উপর ইজ়রায়েল আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ স্বরূপ অনেককেই সাদা এবং কালো রঙের এই স্কার্ফ পরতে দেখা গিয়েছে। মিউজ়িয়ামের নির্ধারিত পোশাকবিধি ভঙ্গ করার ‘অপরাধে’ ওই তিন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আর এই ঘটনার প্রতিবাদেই মিউজ়িয়ামের দেওয়া সম্মান ফিরিয়েছেন ‘দ্য নেমসেক’-এর লেখক।
ঝুম্পার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে মিউজ়িয়ামের বিবৃতি, ‘‘আমরা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান করি। আমাদের পোশাকবিধি নীতি যে সকলের মতাদর্শের সঙ্গে মিলবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।’’ মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ তাঁদের সিদ্ধান্তে অটল থেকে জানান, ‘‘আমরা আমাদের মূল্যবোধের পথ ধরেই ইসামু নোগুচির শিল্পকে বোঝার এবং বোঝানোর মূল লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।’’ তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে মিউজ়িয়ামের অন্দরেও। এই পোশাকবিধির বিরোধিতা করে সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীদের স্বাক্ষর-সহ একটি স্মারকলিপি জমা পড়েছে মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষের দফতরে। তবে ঝুম্পার মতো আন্তর্জাতিক মানের লেখকের এই ঘটনার প্রতিবাদে পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের ঘটনায় মিউজ়িয়ামের জনপ্রিয়তায় খানিকটা আঁচ এসে পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।