Fever

Fever: জ্বরের কারণে কমছে পড়ুয়াদের হাজিরা, আশঙ্কা শিক্ষকদের

শিক্ষকেরা জেনেছেন, অনেক পড়ুয়া এবং কোনও ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের কেউ জ্বরে আক্রান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৫
Share:

বিভিন্ন ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি অল্প হলেও কমেছে। ফাইল ছবি

অনেক ঘরেই পড়ুয়াদের জ্বর। আর তার জেরে কি একটু হলেও কমছে স্কুলে উপস্থিতির হার? এমনটাই আশঙ্কা করছেন শহরের কিছু স্কুলের শিক্ষকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ গরমের ছুটির পরে প্রথম দিকে স্কুলে আসায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যতটা উৎসাহ ছিল, তাতে কমতি না থাকলেও গত দু’-তিন সপ্তাহে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি অল্প হলেও কমেছে। কারণ অনুসন্ধানে শিক্ষকেরা জেনেছেন, অনেক পড়ুয়া এবং কোনও ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের কেউ জ্বরে আক্রান্ত। এই জ্বর ভাইরাসঘটিত না কি অন্য কারণে, সেটা পরীক্ষা না করে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ইতস্তত বোধ করছেন।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশন স্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস জানান, তাঁদের স্কুলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রতিটি বিভাগ থেকে দু’-তিন জন করে পড়ুয়া আসছে না। বিষয়টি খোঁজ করতে গিয়ে শিক্ষকেরা জানতে পারেন, হয় সেই পড়ুয়া জ্বরে আক্রান্ত অথবা তার বাড়ির কোনও সদস্যের জ্বর। জ্বর নিয়ে এলে সেই পড়ুয়ার থেকে সংক্রমিত হতে পারে অন্য সহপাঠীরাও, এই আশঙ্কায় অভিভাবকেরা পুরো সুস্থ হওয়া পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন না।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, ‘‘ভাইরাসঘটিত জ্বর ছাড়াও যে হেতু এখন ডেঙ্গি হচ্ছে, করোনাও পুরো চলে যায়নি, তাই স্কুলে সচেতনতা বাড়ানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জ্বর এলে পড়ুয়ারা যেন রক্ত পরীক্ষা করায়।’’ সরকারি স্কুল বেহালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেরা বলেন, ‘‘জ্বর হওয়ায় কিছু পড়ুয়া আসছে না বলে জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফে স্কুলে শিবির করে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।’’

Advertisement

তাঁদের চেম্বারে সাম্প্রতিক সময়ে জ্বরে আক্রান্ত পড়ুয়াদের ভিড় বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশও। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক স্কুলপড়ুয়া পেয়েছি, যারা ভাইরাসঘটিত জ্বর নিয়ে এসেছে। এই জ্বরের ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে সাত দিন স্কুলে না যাওয়াই ভাল। সর্দি-কাশি পুরো না কমা সত্ত্বেও কোনও পড়ুয়া যদি স্কুলে যায়, তা হলে অন্য পড়ুয়ারা সংক্রমিত হতে পারে।’’ ওই চিকিৎসকের মতে, কোনও ছাত্র বা ছাত্রীর জ্বর হলে এবং সঙ্গে ডেঙ্গির উপসর্গ থাকলে তাকে রক্ত পরীক্ষা করাতে বলা হচ্ছে।

শুধু ভাইরাল জ্বরই নয়, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে প্রথম শ্রেণির কচিকাঁচাদের অনেকে ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজ়িজ়ে’ও আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই অসুখে শিশুদের হাত-পায়ে গুটিবসন্তের মতো জল ভরা ফোস্কা পড়ে। সেই সঙ্গে আসে জ্বর। রোগটি সংক্রামক বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সম্প্রতি পাঠভবনের শিশু বিভাগে একাধিক পড়ুয়ার এই অসুখ ধরা পড়ায় এক সপ্তাহের জন্য অফলাইন ক্লাস বন্ধ রেখেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ডিপিএস রুবি পার্কের প্রিন্সিপাল জয়তী চৌধুরী বলেন, ‘‘জ্বরের জন্য আমাদের স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি খুব বেশি কমেনি। স্কুলে অনলাইন এবং অফলাইনে একসঙ্গে ক্লাস করার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে অভিভাবকদের বলা হয়েছে, তাঁদের ছেলেমেয়েদের যদি জ্বর আসে, তা হলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পরেই যেন তাদের স্কুলে পাঠানো হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement