দেশের নানা জায়গার শিল্পীদের হাতের কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে ‘আর্ট ইন লাইফ’ প্রদর্শনী। —নিজস্ব চিত্র।
কিছুটা এগিয়ে খানিকটা পিছনে ফিরে তাকাতে ইচ্ছা করলে যেমনটা মনে হয় আর কি! পুজোর সময়টা তেমনই। নিজের সাজ থেকে অন্দরসজ্জা, সবেতেই থাকে খানিকটা আধুনিকতা, কিছুটা ঐতিহ্যের ছোঁয়া। সিমা গ্যালারির পুজোর সম্ভার সে কথাই মনে করায়।
রকমারি শাড়ি, চোখ ধাঁধানো গয়না, নজরকাড়া বটুয়া, ঘরে শৈল্পিক ছোঁয়া আনার সরঞ্জাম নিয়ে সিমা গ্যালারিতে শুরু হয়েছে বাৎসরিক প্রদর্শনী ‘আর্ট ইন লাইফ’। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীদের হাতের কাজে জোর দেওয়া হয় এই প্রদর্শনীতে। নজর থাকে এক এক বার, এক এক ধরনের শিল্পের দিকে। এ বছর লখনউ এবং উদয়পুরের শিল্পীদের কাজই তুলে ধরা হয়েছে। সিমা গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার বললেন, ‘‘এ বার লখনউয়ের শিল্পীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন ধরনের জিনিস এনেছি আমরা। তারই সঙ্গে রাখা হয়েছে উদয়পুরের শিল্পীদের হাতের কাজ।’’ তবে ঐতিহ্যের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে মানে যে আধুনিক কোনও জিনিসই নেই, এমনও নয়। তিনি জানান, নানা জনের নানা পছন্দের কথা মাথায় রেখে আধুনিক বিভিন্ন কারুকাজের শাড়ি, গয়নাও রাখা হয়েছে প্রদর্শনীতে।
নানা রাজ্যের শিল্পীদের হাতে তৈরি গয়না দেখতে পাওয়া যাবে প্রদর্শনীতে। —নিজস্ব চিত্র।
এ বছরের মূল আকর্ষণ লখনউয়ের মহিলাদের হাতে তৈরি চিকনের শাড়ি, কুর্তি, সালোয়ার। তারই সঙ্গে রয়েছে বিশেষ ধরনের বাদলা কারুকাজের ওড়না, জরদৌসি কাজের ব্যাগ, পুরুষদের জন্য চিকনকারি শার্টও। এ সবের বেশির ভাগই তৈরি মেহমুদাবাদের মেয়েদের হাতে। মেহমুদাবাদের বেগম বিজয়া খান নিজেই তাঁদের পছন্দসই শিল্পসামগ্রী খুঁজে বার করতে সাহায্য করেছেন বলে জানালেন রাখী।
শহরের বিভিন্ন পোশাকশিল্পীর তৈরি নানা জিনিসও আছে এই প্রদর্শনীতে। —নিজস্ব চিত্র।—নিজস্ব চিত্র।
উদয়পুর হল লখনউয়ের মতোই আর এক শহর যেখানে প্রতি অলিগলিতেও দেখা মেলে চোখ ধাঁধানো শিল্পকর্মের। সেখানেও পুজোর প্রদর্শনীর জন্য গিয়েছিলেন সিমা গ্যালারির প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে কাঠ, পাথর, রকমারি ধাতু, কাপড়ের উপর নানা ধরনের হাতের কাজ।
পুজোয় ঘর সাজানোর সম্ভারও প্রস্তত ‘আর্ট ইন লাইফ’-এ। —নিজস্ব চিত্র।
বাঙালিদের কাছে পুজো মানেই শাড়ি। বাংলার তাঁত, হ্যান্ডলুম, কাঁথা কাজের শাড়িতে যেমন ভরেছে সিমা গ্যালারি, তেমনই উত্তর থেকে দক্ষিণ, দেশের নানা প্রান্তের সিল্ক-সুতির শাড়ির সম্ভাব নজর কাড়বে। চান্দেরির উপর কাজ, সুতির কাঞ্জিভরম, অসমের মেখলা-চাদর বিশেষ ভাবে চোখ টানতে পারে।
প্রতি বারের মতো এ বছরও প্রাক্ পুজো প্রদর্শনীতে আছে শহরের কয়েক জন পোশাকশিল্পীর কাজ। রোশন চৌধুরি, সোনাম দুবল, পরমা ঘোষ, সম্ভাবি খইতান, অনুরাধা রমাম, সুনিতা শঙ্কর, রশ্মি চৌধুরী, শর্মিষ্ঠা ঘোষাল প্রমুখের তৈরি কুর্তি, শাড়ি, জ্যাকেট, ব্লাউজ বিশেষ ভাবে স্থান করে নিয়েছে প্রদর্শনীতে।