Relationship Tips

১৫ বছরের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক প্রভাব ফেলছে তার পড়াশোনায়! কী ভাবে সামাল দেবেন জানালেন মনোবিদ

আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে সরাসরি মানুষের সমস্যার কথা শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৪১
Share:

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবনের এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সব ছুতমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই লোকে কী বলবে-এর প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই। আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে। উৎসবের মরসুম শুরু হওয়ার আগে আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সোমা দাস জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বয়স ১৫। দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়া এক ছাত্রের সঙ্গে সে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে। সারা ক্ষণ তার সঙ্গে ফোনে এবং চ্যাটে ব্যস্ত থাকে মেয়ে। এর প্রভাব পড়ছে তাঁর পড়াশোনার উপর। পরীক্ষার ফলাফল অত্যন্ত খারাপ হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে

মেয়েকে কী ভাবে তিনি সামাল দেবেন?

Advertisement

সোমার উদ্দেশে অনুত্তমার পরামর্শ, ‘‘এই বয়সে জীবনে প্রেম আসাটা খুবই স্বাভাবিক। আমাদের ছোটবেলার কথা মনে করলে কিন্তু এ রকম অজস্র উদাহরণ আমরা পাব। তবে আপনি যদি মনে করেন, মেয়েকে এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলবেন, সেটা কিন্তু ভুলেও করবেন না। আমাদের হয়তো মনে হতেই পারে এই বয়সে আর কি প্রেমে পড়া য‌ায়? তবে ছোটবেলা স্মৃতিগুলিকে উসকে দিয়ে মনে করলে বুঝতে পারবেন, যখন যখন আমরা প্রেমে পড়ি আমাদের মনে হয় এটাই বুঝি আসল প্রেম! কোনটা ‘ক্রাশ’ আর কোনটা প্রেম সেই বোধ কিন্তু বড় হয়েই তৈরি হয়। ছোটবেলায় কারও প্রেমে পড়লে মনে হয়, এই বুঝি আমার স্বপ্নের নায়ক! আপনার মেয়ের সঙ্গেও তেমনটাই হচ্ছে। এই মুহূর্তে আপনি আপনার মেয়েকে বোঝান, যে তার মতো ছেলেটিরও সামনে বড় পরীক্ষা। আর এই সময় তারা যদি পড়াশোনায় গাফিলতি করে, তাদের রেজাল্ট যদি খারাপ হয়, তা হলে কিন্তু ভবিষ‌্যতে তাদের এই সম্পর্ক নিয়েই নানা প্রশ্ন উঠবে। যদি আপনার মেয়ের বিশেষ বন্ধুটির পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয় তা হলে কিন্তু তার মনে হতেই পারে এই সময় কেন সম্পর্কে জড়ালাম। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অল্পবয়সিরা রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তবে মেয়ের এই সম্পর্ককে কিন্তু নাকোচ করে দেবেন না। বাড়িতে যদি এই বিষয়ে খুব বারণ করা হয় তা হলে কিন্তু জেদের বশে, প্রতিবাদের বশে প্রেম একটা ‘প্রজেক্ট’ হয়ে যায়। সেই ক্ষেত্রে আবার হিতে বিপরীত হয়। সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন, প্রেম দারুণ একটা অনুভূতি। তবে জীবনের সব ক্ষেত্রগুলিকেই কিন্তু আমাদের ব্যালেন্স করে চলতে হবে। প্রেম কিন্তু একটা বড় দায়িত্ব। তবে এই দায়িত্বের চাপে পড়ে জীবনের অন্য দায়িত্বগুলিকে অবহেলা করলে চলবে না। পড়াশোনার সময় মোবাইল না হয় বন্ধ করে রাখতে পারে সে। সঙ্গীকে জানিয়ে দিক এই সময়টা তাকে ফোনে পাওয়া যাবে না। দিনের একটা সময় নিশ্চয়ই সে ধার্য করুক সঙ্গীর সঙ্গে কথাবার্তার জন্য, তবে সারা দিন ধরে নয়। তুমি আদৌ প্রেমে পড়ার জন্য তৈরি হয়েছো কি না, তা কিন্তু বোঝা যাবে জীবনের সব ক্ষেত্রগুলিকে সমান ভাবে ভারসাম্য রেখে চলতে পারছ কি না তা দেখেই। তাকে বোঝান আপনি তার প্রেমের বিরুদ্ধে নন, তবে প্রেম ও পড়াশোনা দুটোকেই কিন্তু সমান প্রাধান্য দিতে হবে। না হলে কিন্তু এই সুন্দর প্রেমের সম্পর্কই এক দিন প্রশ্নের মুখে পড়বে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement