‘আফটারনুন টি’-এর আসরে সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পৌলমী চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
দুপুর গড়িয়ে সূর্যের তেজ কমতেই মন চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার জন্য আকুল হয়ে ওঠে। বিলিতি সংস্কৃতিতে বিকেলের এই চায়ের আসরকে বলা হয় ‘আফটারনুন টি’। তবে পেশাগত ব্যস্ততায় এখন ছুটির দিন ছাড়া বিকেলে আয়েশ করে চায়ে চুমুক দেওয়ার ‘বিলাসিতা’ দেখিয়ে ওঠা হয় না। মাঘের শীতে সেই বিলাসী আয়োজন করেছে ৪৯ এ, মহানির্বাণ রোডের ক্যাফে ‘জুম-টিও-গ্রাফি’। ভাবনায় শিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতার অলিগলিতে ক্যাফের মেলা। যে কোনও সময়ে কোনও একটিতে ঢুঁ দিলে মৌজ করে চা, কফি খাওয়াই যায়। তবে বিকেলের চা-চক্রের আসরে যোগ দিতে চাইলে কালীঘাটের এই ক্যাফেতে আসতে হবে। ৩টে থেকে ৬টার মধ্যে যে কোনও সময় এলেই টেবিলে হাজির হবে ‘আফটারনুন টি’ এবং ফিঙ্গার স্যান্ডউইচ, মাফিন, ক্রক্যারি ফিশে সাজানো এক বিশেষ প্ল্যাটার। দাম ৪০০ টাকা। চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। জানালেন ক্যাফের অন্যতম কর্ণধার রূপম মজুমদার। এবং এই ভাবনার আরও এক শরিক।
কলকাতার ক্যাফে কালচারে বিকেলের বিশেষ চায়ের আসরের আয়োজন এই প্রথম। এমন ভাবনার জন্মদাতা সুজয় বলেন, ‘‘বিকালে বাঙালির চায়ের আড্ডাটা ইদানীং হারিয়ে যাচ্ছে। পাড়ার মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাওয়ার সময় ফুরিয়ে আসছে। অথচ এই সংস্কৃতির ভীষণ ভক্ত আমি। বিদেশে গিয়েও বহু বার থিয়েটার দেখতে যাওয়ার আগে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পুরনো ক্যাফেতে গিয়ে আফটারনুন টি খেয়েছি। আমার বেশ লেগেছে। তবে কলকাতার এই ভাল লাগার স্বাদ নেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। আর তাই ভাবলাম এখানে তেমন কিছু করলে মন্দ হয় না। সেখান থেকেই এর পথচলা শুরু।’’
সুজয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে এই চায়ের আসরে আলো করে থাকছেন গুণী শিল্পীরাও। আড্ডার প্রথম দিনই উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা পৌলমী চট্টোপাধ্যায়। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সৌমিত্রের কবিতার ইংরাজি অনুবাদ পড়ে শোনান তিনি। সে দিনের আসরে ছিলেন সোহাগ সেন, চৈতালী দাশগুপ্তেরাও।