Adnan Sami

চিকিৎসক বলেছিলেন মাস ছয়েকের বেশি বাঁচবেন না, তার পর কী ভাবে ১৫৫ কেজি ঝরালেন আদনান সামি?

বেশি ওজনের জন্য দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে। সম্প্রতি সেই সময়ের কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন আদনান সামি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০২
Share:

অতিরিক্ত ওজনের জন্য দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন আদনান সামি। ছবি: সংগৃহীত

২০০ কেজি ওজন নিয়ে শুরু হয়েছিল যুদ্ধ। ১৫৫ কেজি কমিয়ে বলিউড গায়ক আদনান সামি এখন ছিপছিপে, নির্মেদ। নিজের চেহারা নিয়ে নানা সময়ে ট্রোলড হতে হয়েছিল তাঁকে। একটা সময়ে প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন তিনি। ‘তেরা চেহেরা’, ‘উড়ি উড়ি’, ‘ইশক হোতা নেহি’ ইত্যাদি গান তখন লোকের মুখে মুখে ফিরছে। জীবনের চূড়ান্ত সাফল্যও তাঁকে শান্তি দিতে পারেনি। অতিরিক্ত ওজনের জন্য দৈনন্দিন জীবনে নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই সময়ের কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন আদনান।

Advertisement

আদনান জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মেদের কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, দ্রুত ওজন না কমালে আর হয়তো মাস ছয়েক বাঁচবেন। চিকিৎসকের কথায় মন ভেঙে গিয়েছিল আদনানের। কিন্তু হাল ছাড়েননি। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যে ভাবেই হোক, ওজন কমাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই ওজন কমানোর যুদ্ধে নেমেছিলেন। প্রথমেই তিনি যান এক জন পুষ্টিবিদের কাছে। শরীরচর্চার জন্য এক জন ফিটনেস প্রশিক্ষক রাখেন। ওজন কমানোর প্রক্রিয়া সহজ ছিল না মোটেই। আদনান খেতে ভালবাসতেন খুব। ডায়েট শুরুর আগেও প্রতি দিন তিনি খেতেন চিজ কেক, স্টেকের মতো উচ্চ ফ্যাটজাতীয় খাবার।

মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যে ভাবেই হোক, ওজন কমাতে হবে। ছবি: সংগৃহীত

যে দিন থেকে ওজন কমানোর যাত্রা শুরু হল, বদল এল খাদ্যতালিকায়। ভাত, রুটি, বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছিলেন আদনান। সেখানে রোজের পাতে জায়গা করে নিয়েছিল স্যালাড, দই, মাছ, ডাল সেদ্ধর মতো খাবার। চিনি ছুঁয়েও দেখতেন না। চিনি ছাড়া চা খেতেন। দুপুরের খাবারে ছিল সব্জি সেদ্ধ, স্যালাড। রাতে সেদ্ধ ডাল অথবা গ্রিলড চিকেন। মাঝে খিদে পেলে নুন, মাখন ছাড়া খাবার খেতেন তিনি। সঠিক ডায়েট মেনে ৪০ কেজি ওজন ঝরানোর পরে জিমে যাওয়ার অনুমতি পান। জিমে গিয়ে ট্রেডমিলে হাঁটা এবং হালকা শরীরচর্চা দিয়ে শুরু হয় তাঁর শারীরিক কসরত। কয়েক মাস পরে ‘ওয়েট ট্রেনিং’ শুরু করেন। প্রতি মাসে ১০ কেজি করে ওজন কমিয়েছিলেন আদনান। ১৬ মাসে ১৫৫ কেজি ওজন কমিয়ে এখন আদনানের ওজন ৬৫ কেজি।

Advertisement

আদনান জানিয়েছেন, বসে বসে ঘুমোতে হতো। শুয়ে ঘুমোতে পারতেন না। এক বার বসলে সেখান থেকে একা উঠতে পারতেন না। কারও সাহায্য প্রয়োজন হত। রোজকার প্রত্যেকটি কাজে তিনি অন্যের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। শারীরিক কষ্ট তো ছিলই, সেই সঙ্গে ছিল মানসিক যন্ত্রণাও। ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন। এই বিপুল ওজন কমানো কোনও দিন সম্ভব কি না, তা নিয়েই নিজেই অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন।

যে সময়ের মধ্যে দিয়ে তিনি গিয়েছেন, তা সত্যিই অনেক যন্ত্রণার, তা জানিয়েছেন গায়ক। আদনানের কথায়, ‘‘আমার যা অবস্থা ছিল, আমি নিজেই তা দেখে ভয় পেতাম। চিকিৎসক আমাকে মুখের উপর বলে দিয়েছিলেন, ওজন না কমালে আপনি যে কোনও দিন মারা যেতে পারেন। গাড়িতেও উঠতে পারতাম না। উঠলেও ঠিক করে বসতে পারতাম না। ওজন কমানোর পর আমি একেবারে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement