—প্রতীকী ছবি।
বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে করতে খাচ্ছিলেন। হঠাৎই জিভে কামড় খান। ক্ষণিকের অসতর্কতায় তাঁর উপর দিয়ে এমন ঝড় বয়ে যাবে, তা কল্পনাও করেননি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সি ক্যাটেলিন। জিভে কামড় খেয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জিভে কামড় খাওয়া অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। রোজ চলতে-ফিরতে অসংখ্য বার জিভে কামড় খান অনেকেই। জিভের কামড় খাওয়া অংশে কিছু ক্ষণ ব্যথা থাকে, অনেক ক্ষেত্রে ফুলেও যায়। জিভে কামড় খেলে এর চেয়ে বেশি কোনও সমস্যায় কারও তেমন হয় না। কিন্তু ক্যাটেলিনের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই।
অনেক দিন পর ছোটবেলার বন্ধু বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে খাবার খাচ্ছিলেন। খাবার চিবোনোর সময় জিভে কামড় খান ক্যাটেলিন। সেই মুহূর্তে হালকা যন্ত্রণা হলেও পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে কিছু ক্ষণ পর থেকেই। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, গলায় এবং মুখে র্যাশ বেরোতে শুরু করে। নিজের শারীরিক অবস্থা বুঝে তড়িঘড়ি হাসপাতালে যান তিনি। হাসপাতালে যাওয়ার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন ক্যাটেলিন। ত্বক নীল হয়ে যেতে থাকে, হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কিছু ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। তার পর আরও বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করার চিকিৎসকেরা জানান ‘লুদউইগ অ্যাঞ্জিনা’ নামে এক ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের কারণেই এমন হয়েছে। এই ব্যাক্টেরিয়া মুখের ভিতর এবং ঘাড়ের নরম কোষে মূলত হানা দেয়। ক্যাটেলিনের আক্কেল দাঁত উঠছিল। সেখান থেকেই এই জীবাণুর জন্ম। সেই আক্কেল দাঁতই জিভে কামড় বসায়। এবং সঙ্গে ওই ব্যাক্টেরিয়া জিভ থেকে সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করার আগেই কোমায় চলে যান ক্যাটেলিন। তবে অসুস্থতার কারণ জানা থাকায় চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে সুস্থও হয়ে ওঠেন ক্যাটেলিন।
‘লুদউইগ অ্যাঞ্জিনা’ অত্যন্ত বিরল একটি রোগ। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রতি দশ জনে এক জনের হয়। ডায়াবিটিস, মদ্যপানের প্রবণতা, অপুষ্টিজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে এই ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। ধুম জ্বর, ঘাড়ে এবং গলায় ব্যথা, চোয়ালে ব্যথা, কথা বলতে সমস্যা হওয়া— এগুলি হল লুদউইগ অ্যাঞ্জিনার উপসর্গ। জেনে রাখলে চিকিৎসা শুরু করতে সুবিধা হবে।