দেশে প্রতি ১০ জন মহিলার চার জনই স্তন ক্যানসারের শিকার হন। প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ২০২০ সালের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি ১০ জন মহিলার চার জনই স্তন ক্যানসারের শিকার হন। গবেষণায় জানা যাচ্ছে, স্তন ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা নেয় বয়স, স্থূলতা, মদ্যপানের প্রবণতা ও বংশগতির দিকগুলি। ‘ন্যাশনাল ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম, ২০২০’-র তথ্য বলছে, সে বছর দেশে দু’লক্ষের বেশি মহিলার স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে। আর প্রায় ৭৬ হাজার স্তন ক্যানসার রোগীর মৃত্যুর তথ্যও নথিভুক্ত হয়েছে।
অতিমারির কারণে অবহেলিত হয়েছে ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা। চিকিৎসকদের মতে, ঠিক মতো সমীক্ষা করা গেলে দেখা যেত, গত দু’বছরে স্তন ক্যানসারে মৃত্যুর এবং চতুর্থ স্তরে পৌঁছে যাওয়া রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে।
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে শনিবার শহরে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উঠে এল এই দিকগুলিও। আলোচনা হল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পেয়েছে, এমন আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং ওষুধ নিয়ে। সম্মেলনের মুখ্য অতিথি ছিলেন টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতাল, মুম্বইয়ের অধিকর্তা, ক্যানসার শল্য চিকিৎসক রাজেন্দ্র অচ্যুত বাড়ওয়ে। উপস্থিত ছিলেন ইউ কে ফাস্ট ফরোয়ার্ড ট্রায়ালের ডানকান হুইটলি, দুবাইয়ের ক্যানসার চিকিৎসক শাহিনা দাউদ এবং কলকাতা থেকে ক্যানসার শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, সৈকত গুপ্ত ও ক্যানসার চিকিৎসক পি এন মহাপাত্র-সহ দেশ-বিদেশের দুশোরও বেশি চিকিৎসক।
চিকিৎসক হুইটলি স্তন ক্যানসারে পাঁচ দিনের রেডিয়েশন চিকিৎসার ফাস্ট ফরোয়ার্ড প্রোটোকল নিয়ে আলোচনা করেন। চিকিৎসক বাড়ওয়ে জানান, ট্রায়ালে থাকা তাঁদের চিকিৎসা পদ্ধতির কথা। যেখানে অস্ত্রোপচারের আগে টিউমারের চারপাশে লোকাল অ্যানাস্থেশিয়া দিয়ে ক্যানসার কোষগুলিকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়, যাতে কাটাছেঁড়ার সময়ে তারা ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এই পদ্ধতিতে গত সাত বছরে ২৬ শতাংশ ভাল ফল মিলেছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, গত পাঁচ বছরে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। নতুন পদ্ধতি এবং ওষুধের সাহায্যে চতুর্থ পর্যায়ের রোগীরাও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকছেন।
সম্মেলনের উদ্যোক্তা অ্যাপোলো হাসপাতাল ও ‘অ্যাসোসিয়েশন অব রেডিয়েশন অঙ্কোলজিস্টস অব ইন্ডিয়া’। আয়োজকদের তরফে ক্যানসার চিকিৎসক সায়ন পাল বলেন, ‘‘গত বছর থেকে শহরে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় ফাস্ট ফরোয়ার্ড প্রোটোকল শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক ওষুধের ব্যবহারও শুরু হয়েছে।’’