আমেরিকার বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি ডায়ানা আর্মস্ট্রং। ছবি- সংগৃহীত
তাঁকে যদি বলা হয় কম্পিউটারে টাইপ করতে, ডাহা ফেল করবেন তিনি। যদি বলেন গিটারে টুং টাং করতে, হাত তুলে নেবেন নিজেই। ও সব তো দূরে থাকে, নিজের হাতে স্নান করতে, খেতে পর্যন্ত পারেন না।
আমেরিকার বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি ডায়ানা আর্মস্ট্রং। ডায়ানার হাতের দিকে তাকালে নজরে পড়বে তাঁর নখের বহর। ৪৪ সেন্টিমিটার দীর্ঘ নখ। এক নয়, দু’হাতেই এমন দীর্ঘ নখ নিয়ে ঘুরছেন তিনি। দু’হাতের দশ আঙুলের নখ— সমান মাপে কাটা। নখ-নকশাও করেছেন যত্ন নিতে। নখের নানা রঙের আঁকিবুঁকি যেন এক-একটি ছবি। ১৯৯৭ সালে শেষ বার নখ কেটেছিলেন তিনি। এর পিছনে রয়েছে এক হৃদয়-বিদারক কাহিনি। ১৯৯৭ সালে ডায়ানার ১৬ বছরের মেয়ে লতিশা হাঁপানিতে ভুগে মারা যায়। ডায়ানার নখের পরিচর্যার দায়িত্ব ছিল লতিশার।
কোনও জমায়েতে গেলে তিনিই হয়ে ওঠেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ছবি- সংগৃহীত
সন্তান মারা যাওয়ার পর থেকে ডায়ানা নখের যত্ন নেওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। ২৫ বছরের অযত্নের ফলেই ৪২ সেন্টিমিটার দীর্ঘ নখ তাঁর। এখন অবশ্য এই নখের উপর নকশা করতে ২৪ ঘণ্টাও কম পড়ে যায়।
নখের কারণে অনেক কাজই নিজে হাত করতে পারেন না ডায়ানা। কোনও জিনিস মাটি থেকে তুলতে সাহায্য নিতে হয়। ফ্রিজ বা আলমারি হাতের বদলে অনেক সময়ে পা দিয়ে খোলেন তিনি। হাজার অসুবিধা মেনে নিয়েও নখ কেটে ফেলার কথা মনে আনেননি ডায়ানা। কোনও জমায়েতে গেলে তিনিই হয়ে ওঠেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ভিড়ের মধ্যে সকলের নজর থাকে তার-ই উপর। সে তো ওই লম্বা নখরের জন্যই। নখের সুবাদে সম্মান কম পাননি। মাথায় উঠেছে সেরার শিরোপার মুকুটও। রাস্তায় বেরোলে প্রচুর মানুষ ছবি তুলতে আসেন। অনেকেই নখের ছবি তুলে নিয়ে যান। প্রথম দিকে এই ব্যাপারগুলি খানিক অস্বস্তি কাজ করত। সামনে আসতে চাইতেন না। নখের কারণে জনপ্রিয়তা যখন নিজস্ব এলাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ল, আড়াল থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ডায়ানা। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ডায়ানা জানিয়েছেন, এমন অদ্ভুত কারণে যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা যায় তা অকল্পনীয় ছিল তাঁর।