১০০ বছর ধরে তারা চেনা স্বাদ ধরে রাখতে পেরেছে। তাই ভোজনরসিকদের ভিড় এখনও কমেনি। রোজ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরনো-নতুন— সব রকম খদ্দেরের ভিড়ই সামলাতে হয় তাদের। দেখে নিন এই তালিকায় রয়েছে দেশের কোন রেস্তরাঁগুলি।
জামা মসজিদ থেকে কয়েক পা হাঁটলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকানে। প্রথম শুরু করেছিলেন করিমউদ্দিন। এখনও সেখানাকার কবাব আর পরোটা খেতে রাত-বিরেতে ভিড় পড়ে যায়। বহু শহরে এর শাখা খুলেছে ঠিকই। কিন্তু আসল স্বাদ পেতে লোকে এখনও এখানেই দৌড়োন। কোফতা, কোর্মা, বিরিয়ানি— খাদ্যতালিকার প্রত্যেকটি পদই জিভে জল এনে দেওয়ার মতো।
গোল দরওয়াজা সরণির একটি কবাবের দোকানে কাজ করতেন হাজি মুরাদ আলি। তাঁর ছিল একটিই হাত। সেই থেকেই ‘তুন্ডে’ শব্দটির সূত্রপাত। লখনউ মানেই এখন লোকে প্রথমে এই শব্দটির কথাই ভাবেন। তুন্ডে কবাবের সুগন্ধ যেমন গলির মাথা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তাঁর স্বাদের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশে। শোনা যায়, এই কবাবে নাকি ১২৫টি উপকরণ পড়ে। তবে প্রণালী এখনও পরিবারের বাইরে বেরোয়নি।
লিওপোল্ড কাফে, মুম্বই: কাফেতে গিয়ে বসলে এখনও আপনি দেওয়ালে এবং আয়নায় ২৬/১১-র বিভীষিকার চিহ্ন দেখতে পাবেন। কোলাবার মাঝে এই কাফেতে যেমন ভিড় ভারতীয়দের, তেমনই বিদেশিদের। খাদ্যতালিকায় থাকে নানা পদ। তার মধ্যে জনপ্রিয় পারসি খাবারগুলি। লিওপোল্ডে বেকারির খাবারের চাহিদাও কম নয়।
শেখ ব্রাদার্স বেকারি, গুয়াহাটি: ১৮৮৫ থেকে এই বেকারির কেক-পেস্ট্রি-পাউরুটি জনপ্রিয়। শোনা যায় সে সময়ের প্রথম পশ্চিমী ধাঁচের বেকারি এ দেশে এটিই ছিল। পরবর্তী সময়ে জওহরলাল নেহরুও নাকি বিশেষ ভক্ত ছিলেন এই বেকারির। এখন মেনুতে থাকে বার্গার-হটডগের মতো বেশ কিছু ফাস্টফুডও।
অ্যালেনস কিচেন, কলকাতা: এক স্কটিশ ভদ্রলোকের নামে নামকরণ। শোভাবাজারের এই ছোট্ট খাবারের দোকানের খ্যাতি সারা শহর জুড়ে। ১৩২ বছর ধরে খাদ্যরসিকরা এখানে ভিড় করেন চিংড়ির কাটলেটের টানে। মুখে দিলেই গলে যায় এমন চিংড়ির কাটলেট অ্যালেনস কিচেন ছাড়া আর বিশেষ কোথাও পাওয়া যায় না। খাদ্যতালিকা ছোট হলেও এখানকার খাবার এক বার খেলে তার স্বাদ জিভে লেগে থাকবে আজীবন।
দোরাবজি অ্যান্ড সন্স, পুণে: ১৮৭৮ সালে সোরাবজি দোরাবজি একটি ছোট্ট চায়ের দোকান খুলেছিলেন। সেটিই পরে রেস্তরাঁ হয়। এখন সেটি চালান তাঁরা নাতিরা। বিভিন্ন পারসি খানা এবং ইরানি চা খেতে ভি়ড় করেন দেশ-বিদেশের মানুষ। তবে ঝাঁ চকচকে পরিবেশ পছন্দ নয় নির্মাতাদের। তাই অতি সাধারণ অন্দরসজ্জা এই রেস্তরাঁয়। কিন্তু স্বাদের টানে বারবার যান সকলে।
গ্লেনারিজ, দার্জিলিং: ব্রিটিশ আমল থেকে দার্জিলিঙের মল রোডের বুকে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বেকারি-রেস্তরাঁ। সকাল সকাল হিমালয় দেখতে দেখতে এখানে বসে পোচ-সসেজ খাওয়ার মজাই আলাদা। শোনা যায়, কোনও এক ইটালিয়ান এই বেকারি খুলেছিলেন। চকোলেট, টার্ট, পেস্ট্রি— গ্লেনারিজের যে মিষ্টি পদই খাবেন, স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।