Computer Science

মুশকিল আসান কম্পিউটার সায়েন্স

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনের প্রয়োজনগুলো যেমন পাল্টাচ্ছে, তেমনই পাল্টাচ্ছে রোজকার সমস্যাগুলিও।

Advertisement

পার্থ বসুচৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

কোভিডের প্রতিষেধক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে ঘরের স্বাচ্ছন্দ্যে বসে বিদ্যুতের বিল জমা দেওয়া, গাড়িতে বসেই জিপিএস ব্যবহার করে কোনও জায়গা খুঁজে দেখা থেকে দূর দেশে কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে নিমেষে যোগাযোগ— সব কিছুর পিছনেই রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স।

Advertisement

পেশাগত তো বটেই, অনেক সময় বাড়ির অনেক কাজেও আমাদের সাহায্য করে মোবাইল বা কম্পিউটার। গত ২০-২৫ বছরে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্সের দুনিয়াটাও যে ভাবে প্রসারিত হয়েছে, তাতে নতুন প্রজন্মের কাছে এই ক্ষেত্রটি খুলে দিয়েছে কেরিয়ারের নতুন পথ।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। কয়েকটি মাউসের ক্লিকের সাহায্যে কোনও ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে আমরা নিজেদের পছন্দের পণ্য কিনে ফেলতে পারি। কিন্তু মাউসের ক্লিকের পিছনে যে যে ঘটনাগুলি পর পর ঘটার ফলে ওই পছন্দের জিনিস তোমার বাড়িতে চলে আসে, তা তুমি ঘুণাক্ষরেও টের পাও না।

Advertisement

ই-কমার্স ওয়েবসাইটে প্রথমে তুমি জিনিসের খোঁজ করো। সেই অনুরোধটা সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় দূর-দেশের কোনও কম্পিউটারে। সেখানে লক্ষ লক্ষ পণ্যের তথ্যের তালিকা থেকে তোমার পছন্দের পণ্যটির মতো আরও পণ্য নিমেষের মধ্যে খুঁজে বার করে তোমাকে দেখানো হয়। এগুলিতে সাহায্য করে নানা ‘অ্যালগরিদম’।

এ বার পছন্দের পণ্যটি কিনতে চাইলে সেটা ‘ই-কার্ট’-এ যোগ করো। এর পরে কোনও তৃতীয় পক্ষ আর্থিক লেনদেনের পোর্টালের মাধ্যমে টাকার আদানপ্রদান হয়। প্রতি দিনই দুনিয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন অনলাইনে হয়। বলা বাহুল্য, এটা সম্ভব হত না যদি না এই লেনদেন যথেষ্ট সুরক্ষিত হত। এই সুরক্ষার পিছনে আছে ‘ক্রিপ্টোগ্রাফি’ এবং ‘নেটওয়ার্ক সিকিয়োরিটি’ সংক্রান্ত তত্ত্ব, যা শেখানো হয় কম্পিউটার সায়েন্সের ক্লাসে। তোমার কেনা জিনিসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অন্যান্য জিনিস কেনার সুপারিশও দিয়ে থাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো। এর নেপথ্যে রয়েছে ‘রেকমেন্ডেশন সিস্টেমস’ সংক্রান্ত তত্ত্ব। পুরো ব্যাপারটাকে সম্ভবপর করে ওয়েব টেকনোলজি। তোমার ই-কমার্স ওয়েবসাইট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সুন্দর করে তুলতে যারা নেপথ্যে কাজ করে চলেছেন, তাঁদের প্রধান হাতিয়ার কম্পিউটার সায়েন্সের জ্ঞান।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনের প্রয়োজনগুলো যেমন পাল্টাচ্ছে, তেমনই পাল্টাচ্ছে রোজকার সমস্যাগুলিও। মাইক্রোসফ্ট-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের ভাষায়, “কম্পিউটারের জন্ম হয়েছে নতুন প্রজন্মের নতুন সমস্যাগুলির সমাধান করতে।” ফলে আজকের দুনিয়ায় কম্পিউটার সায়েন্সের জ্ঞান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তোমাদের এতে উৎসাহ আছে কি না, সেটা নিজেরাই ভেবে দেখো।

অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, স্কুল অব ম্যাথমেটিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটেশনাল সায়েন্সেস, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement