বিয়ের পরে এন ডি তিওয়ারি এবং উজ্জ্বলা শর্মা। ছবি: পিটিআই।
বৃ্দ্ধস্য ভার্যা, তবে তরুণী নন। পাত্রের বয়স ৮৮ হলে পাত্রীও ৬৭। লখনউয়ের মল অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মহা ধুমধাম করে চার হাত এক হল দু’জনের। পুরোহিত ডেকে মানা হল সব প্রথাও।
মাস কয়েক আগেই ছেলেকে মেনে নিয়েছেন। এ বার ছেলের মাকেও বউ করে ঘরে তুললেন এন ডি তিওয়ারি।
দীর্ঘ ছ’বছরের আইনি লড়াইয়ে ক্ষান্ত দিয়ে সম্প্রতি রোহিত শেখর নামে এক যুবককে নিজের ছেলে বলে স্বীকার করেছেন তিওয়ারি। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। এ বার রোহিতের মা উজ্জ্বলা শর্মাকে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার কাজটাও সেরে ফেললেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন গভর্নর এন ডি তিওয়ারির বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে পিতৃত্বের দাবি নিয়ে মামলা করেছিলেন ৩২ বছরের রোহিত। রোহিতের দাবি ছিল, তিনি তাঁর বাবার সম্পত্তি চান না। শুধু চান তাঁকে ছেলে বলে স্বীকার করুন তিওয়ারি। কিন্তু মানতে চাননি তিওয়ারি। এমনকী উজ্জ্বলার সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কের কথাও অস্বীকার করেছিলেন এক সময়। মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ালে ডিএনএ পরীক্ষায় রাজি হতে হয় তিওয়ারিকে। অবশেষে কোর্টের রায় আসার আগেই গত মার্চে তিওয়ারি রোহিতকে নিজের ছেলে বলে স্বীকার করে নেন।
কিন্তু প্রাক্তন কলেজশিক্ষক উজ্জ্বলা শর্মাকে হঠাৎ এত দিন পরে বিয়ের সিদ্ধান্ত কেন? শোনা যাচ্ছে, তিওয়ারির সঙ্গে এক বাড়িতে থাকার জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই চাপ দিচ্ছিলেন উজ্জ্বলা। এ মাসের শুরুতে তিওয়ারির বাড়ির সামনে ধর্নাতেও বসেছিলেন তিনি। শেষমেশ তাই উজ্জ্বলাকে বিয়ের সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেন তিওয়ারি।
এমনিতে তাঁর স্ত্রী মারা গিয়েছেন বহু দিন হল। দিন কয়েক আগে কুলপুরোহিতকে ডেকে বিয়ের দিনক্ষণ স্থির করেন তিওয়ারি। আজ মোটা গোলাপ ফুলের মালা আর পাগড়ি পরে প্রথা মেনে সিঁদূর দান করেন নববধূকে। বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন ছেলে রোহিত।
এত দিন পরে তাঁদের সম্পর্ক সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি উজ্জ্বলাদেবী। বিয়ের ঠিক পরপরই সাংবাদিকদের বলেন, “আমি খুব খুশি। তিওয়ারিজিই বিয়ের পরামর্শটা দিলেন। এত দিনে আমাদের সম্পর্কটা একটা স্বীকৃতি পেল।”
তবে প্রবীণ নেতার বিয়ে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দলগুলি। তিওয়ারির বিয়ে নিয়ে আজই মজাদার টুইট করেছেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী। লিখেছেন, “৮৮-তে গাঁটছড়া বাঁধলেন এন ডি তিওয়ারি। এর পর দিগ্বিজয় সিংহের পালা। কংগ্রেসের আরও অনেক নেতাই লাইনে আছেন...।”
বস্তুত তিওয়ারির বিয়ের খবর ছড়ানোর পরপরই দিগ্বিজয় সিংহকে নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও নানা খবর ছড়াচ্ছে। এ মাসের গোড়ার দিকে তরুণী সাংবাদিক অমৃতা রাইয়ের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন দিগ্বিজয়। জানান, খুব শিগগির বিয়ে করতে চলেছেন তাঁরা। প্রায় মেয়ের বয়সী এক মহিলাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে দিগ্বিজয়কে।
বিরোধী দলগুলি তো বটেই, দিগ্বিজয়ের নিজের ভাইয়ের স্ত্রী রুবিনা শর্মা সিংহর বক্তব্য ছিল, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে লক্ষ্মণ যখন রুবিনাকে বিয়ে করেন, তখন প্রবল আপত্তি জানিয়েছিলেন দিগ্বিজয়। কারণ, তাঁর ভাইয়ের থেকে রুবিনা প্রায় ১৩ বছরের ছোট ছিলেন। রুবিনা বলেছিলেন, “এখন তো উনি নিজের মেয়ের চেয়েও ছোট এক জনকে বিয়ে করছেন। তা হলে আমাদের বেলায় এত সমস্যা ছিল কেন?”