আজিজ কুরেশি
উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল পদ থেকে আজিজ কুরেশিকে সরানোর বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে আজ নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। অভিযোগ, তাঁকে যে ভাবে রাজ্যপাল পদ থেকে সরানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে, তা অসাংবিধানিক। প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির এক
বেঞ্চ নোটিসের জবাব দিতে ছ’সপ্তাহ সময় দিয়েছে কেন্দ্রকে। নোটিস পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামীকেও। রাজ্যপালের পদ থেকে সরে যাওয়ার বার্তা তিনিই দিয়েছিলেন আজিজকে।
ইউপিএ আমলে নিযুক্ত রাজ্যপালদের সরানো প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। ইউপিএ জমানার অনেক রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই পদ ছেড়েছেন। কিন্তু আজিজ মোদী সরকারের তরফে বার্তা পেয়েও সেই পথে হাঁটেননি। উল্টে সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজিজ সুপ্রিম কোর্টে যান বুধবার। প্রশ্ন তোলেন, কী ভাবে তাঁর চেয়ে কম পদমর্যাদার কেউ (কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অনিল গোস্বামী) ফোনে তাঁকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন? রাজ্যপালের মতো একটি সাংবিধানিক পদ থেকে এ ভাবে জোর করে কাউকে সরিয়ে দেওয়া যায় কি?
এই প্রসঙ্গে সংবিধানের ১৫৬(১) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে আজিজ বলেন, রাষ্ট্রপতির আপত্তি না থাকলে রাজ্যপাল পাঁচ বছরই পদে থাকতে পারেন। তাই তিনিও থাকবেন। তাঁকে সরানোর ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রপতিরই। তার পরেই সুপ্রিম কোর্ট জরুরি শুনানি করে আজ নোটিস পাঠিয়েছে কেন্দ্রকে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনও রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকে মোদী সরকার ইতিমধ্যেই দু’জন রাজ্যপালকে পদচ্যুত করেছে। এক জন মিজোরামের রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়াল এবং অন্য জন পুদুচেরির রাজ্যপাল বীরেন্দ্র কাটারিয়া। কেন্দ্রে পালাবদলের পরেই মে মাসে ইউপিএ জমানার আরও চার রাজ্যপাল অবশ্য নিজেরাই পদ থেকে সরে যান।
২০১২-র ১৫ মে উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপালের দায়িত্বে আসেন আজিজ কুরেশি। তাঁর অভিযোগ, গত ৩০ জুলাই অনিল গোস্বামী তাঁকে ফোন করে পদত্যাগ করতে বলেন। নিজে থেকে পদত্যাগ না করলে আজিজকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন অনিল। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলে ২ অগস্ট রাষ্ট্রপতির কাছে কুরেশি গিয়ে সব জানান। কিন্তু তার এক সপ্তাহের মাথায়, ৮ অগস্ট ফের অনিল গোস্বামী ফোন করে পদত্যাগের জন্য চাপ দেন বলে অভিযোগ। কুরেশি তাঁর আবেদনে বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কখনওই স্বরাষ্ট্রসচিব মারফত ভয় দেখিয়ে পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে না। এ ধরনের কাজ সংবিধানবিরোধী।”