দাদাকে খুঁজছেন দুই ভাই। ছবি: সংগৃহীত।
ওড়িশার বালেশ্বর জেলার বাহানাগা স্টেশনের কাছে দলা পাকিয়ে রয়েছে দু’টি ট্রেন আর মালগাড়ি। কী ভাবে কী হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুর্ঘটনাস্থলে চলছে উদ্ধারকাজ। পুলিশ-প্রশাসন থেকে রেলকর্মী— উদ্ধারকাজে শামিল সকলেই। তাঁদের পাশাপাশি হন্যে হয়ে দুর্ঘটনাস্থলে নিজেদের দাদাকে খুঁজে চলেছেন ২ ভাই। ভেঙে মুচড়ে যাওয়া কামরার বাইরে দাঁড়িয়ে উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। ঘন ঘন ডাকছেন দাদার নাম ধরে। ২ ভাইয়ের ধারণা, আর বেঁচে নেই দাদা। তবু হাল ছাড়তে নারাজ।
১৪ বছর পর মায়ের শেষকৃত্যের জন্য চেন্নাই থেকে ফিরেছিলেন রমেশ জেনা। কাজ শেষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপে ফিরছিলেন কর্মক্ষেত্রে। পথে দুর্ঘটনা। রমেশের ভাই জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বালেশ্বর স্টেশন থেকে চেন্নাইগামী ট্রেন ধরেন দাদা। বলেছিলেন, ভদ্রক স্টেশনে পৌঁছে একটা ফোন করবেন।’’ সেই ফোন আর আসেনি। ভদ্রক স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান রমেশের দুই ভাই।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন রমেশের দুই ভাই। দাদাকে ফোন করেন। এক ভাইয়ের কথায়, ‘‘দাদার ফোন ধরে অপরিচিত এক জন বলেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহের পকেট থেকে এই ফোন তিনি পেয়েছেন। সেই থেকে আমরা দাদার দেহ খোঁজার চেষ্টা করছি।’’ অন্য এক ভাই জানিয়েছেন, শুধু ঘটনাস্থল নয়, একের পর এক হাসপাতাল, মর্গ, সর্বত্র খুঁজেছেন দাদাকে। এখনও কোনও সন্ধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত দলাপাকানো কামরার বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা। যদি সেখানে এক বার দেখা মেলে দাদার। জীবিত বা মৃত!
রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬০ জন। আহত ৬৫০ জনেরও বেশি।