হায়দরাবাদে যোগী।
নিজামের শহরে পুরসভা ভোট নিয়ে তরজা জমে উঠেছে। ভোট সংক্রান্ত একাধিক কর্মসূচি নিয়ে রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসেছেন হায়দরাবাদ। শহরে এসেই প্রথমে তাঁর যাওয়ার কথা ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দিরে। তার আগে হায়দরাবাদের নাম পাল্টে ‘ভাগ্যনগর’ করা নিয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক। এ দিকে, আমিতের আসার ঠিক আগেই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও হায়দরাবাদবাসীকে ‘বিভাজনকারী শক্তি’-র থেকে শহরকে বাঁচানোর আবেদন জানালেন।
কখনও বিজেপির নেতা বলছেন, হায়দরাবাদ থেকে রোহিঙ্গা এবং পাকিস্তানিদের তাড়াতে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করা হবে। আবার কখনও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলছেন, ঐতিহাসিক এই শহরের নামই বদলে দেবেন।
প্রসঙ্গত, রামের নামে অযোধ্যা বিমাবন্দরের নামকরণে সায় দিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার। তার পর এক সপ্তাহও কাটেনি। এ বার হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তনের দাবি তুললেন যোগী। তাঁর মতে, নিজামের শহরের নাম বদলে ‘ভাগ্যনগর’ করা উচিত।
যোগীর ভাষণ।
আরও পড়ুন: অমিতের প্রস্তাব মানা হবে কি না, তা নিয়ে আজ বৈঠকে কৃষকরা
পুরসভা নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার আসাদউদ্দিন ওয়াইসির গড় বলে পরিচিত ওল্ড সিটির লাল দরওয়াজায় দলের হয়ে সভা করেন যোগী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘অনেকে জানতে চাইছিলেন, হায়দরাবাদের নাম পাল্টে ভাগ্যনগর করা যায় কি না। কেন করা যাবে না? আমি ওঁদের বললাম, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ফৈজাবাদের নাম পাল্টে অযোধ্যা হয়েছে। ইলাহাবাদকে প্রয়াগরাজ করেছি আমরা। তাহলে হায়দরাবাদকে ভাগ্যনগর করা যাবে না কেন?’’
অমিতের সফরের আগে কড়া নিরাপত্তা।
আরও পড়ুন: মোট সংক্রমণ ৯৪ লক্ষ ছুঁইছুঁই, দৈনিক মৃত্যুতে মহারাষ্ট্রকেও ছাপিয়ে গেল দিল্লি
গেরুয়া শিবির থেকে দীর্ঘদিন ধরেই হায়দরাবাদের নামকরণের দাবি উঠছিল। দলের নেতাদের দাবি ছিল, হায়দরাবাদের আসল নাম ভাগ্যনগরই। নিজামদের হাতে তা হায়দরাবাদে পরিণত হয়। যদিও তাঁদের এই দাবি খারিজ করেছেন ঐতিহাসিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, গোলকোণ্ডা ফোর্টের চারিদিকে সারি সারি বাগান থাকায় ঊর্দু শব্দ ‘বাগ’ থেকে শহরের নাম বাগনগর হয়। পরবর্তী কালে হায়দরাবাদ নামকরণ হয়। ফরাসি পর্যটকদের বিভিন্ন নথি থেকে তা উঠে এসেছে। ১৮৮৪ সালে শহরের রাজস্ব সংক্রান্ত যে নথি পাওয়া যায়, তাতেও কোথাও ভাগ্যনগরের কোনও উল্লেখ নেই। সুলতান মহম্মদ কুলি এবং ভাগমতী নামের এক মহিলার সম্পর্কের কথা শোনা যায়। অনেকে তা রূপকথা বলে উড়িয়ে দেন যদিও। কিন্তু মহম্মদ কুলি কখনও ভাগমতীর নামে শহরের নামকরণ করেছিলেন, এমন তথ্যপ্রমাণ নেই বলেই জানিয়েছেন ইতিহাসবিদদের একাংশ।
তবে ঐতিহাসিকদের যুক্তি কানে তুলতে নারাজ গেরুয়া শিবির। তাই আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে ভাগ্যনগরের ভাগ্য নির্ধারণের ডাক দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, এমআইএম এবং ওয়াইসিকে নিজামের বংশধর বলেও উল্লেখ করেন যোগী। তিনি বলেন, ‘‘নিজামের বংশধরদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। শহরের উনন্য়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওরা।’’