যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে দলের খারাপ ফলের পরে আজই প্রথম বার অযোধ্যা সফরে গেলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মন্দির ও রামলালা দর্শনের পাশাপাশি অযোধ্যা সংলগ্ন মিল্কিপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের প্রচারে নেমে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের প্রসঙ্গে সরব হন তিনি। বিরোধীদের বক্তব্য, বাংলাদেশকে সামনে রেখে ফের মেরুকরণের রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছেন যোগী।
রামমন্দির নির্মাণের বছরেই অযোধ্যা খালি হাতে ফিরিয়েছে বিজেপিকে। অযোধ্যা যে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ফৈজাবাদ কেন্দ্র থেকে এ বারের লোকসভায় জিতেছেন দলিত প্রার্থী, সমাজবাদী নেতা অবধেশ প্রসাদ। স্বাভাবিক ভাবেই অযোধ্যার ওই হারে দলে প্রবল তোলপাড় শুরু হয়। টলোমলো হয়ে পড়ে যোগীর গদিও। এই পরিস্থিতিতে মিল্কিপুর-সহ রাজ্যের দশটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন হতে চলেছে। দলে তাঁর বিরুদ্ধে যারা সরব হয়েছেন, তাঁদের মুখ বন্ধ করতে দশে দশ পাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মরিয়া হয়ে নেমেছেন যোগী।
আজ সেই প্রচারের অঙ্গ হিসাবে মিল্কিপুর সংলগ্ন অযোধ্যায় রামমন্দির ও রামলালা দর্শনে যান যোগী। রামলালা দর্শনে আগত যাত্রীদের পরিষেবা নিয়ে কোনও যাতে সমস্যা না হয়, তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা করেন তিনি। পরে মিল্কিপুরে একটি জনসভা থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতন নিয়ে সরব হন। যোগী বলেন, সে দেশে ক্ষমতা পরিবর্তনের জেরে হিন্দু ও অন্যান্য সংখালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ কোনও ভাবেই কাম্য নয়। অবিলম্বে ওই আক্রমণ বন্ধ করার দাবি জানান তিনি। হিন্দুদের উপরে আক্রমণের প্রশ্নে বিরোধীদের ‘নীরবতা’ নিয়ে কংগ্রেস-এসপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলকে নিশানা করেন যোগী। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা যে হেতু বিপক্ষ শিবিরের ভোট ব্যাঙ্ক নয়, সে কারণে তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আদৌ ভাবিত নয় বিরোধীরা। যোগীর কথায়, ‘‘এটাই বিরোধীদের নীতি। বিরোধীরা নিজেদের স্বার্থের জন্য হিন্দুসমাজকে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হল সবাইকে রক্ষা করা।’’
আজ উত্তরপ্রদেশে সে রাজ্যের ভোট প্রচারে যে ভাবে বাংলাদেশের হিন্দুদের রক্ষার জন্য যোগী ডাক দিয়েছেন, তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট— আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জিততে হিন্দু ভোটের উপরেই ভরসা রেখেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মনে করছেন, হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করে হিন্দু ভোটকে এককাট্টা করতে পারলেই বাজিমাত সম্ভব। যদিও কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, লোকসভা ভোটে মেরুকরণের রাজনীতির চেষ্টা করেছিল বিজেপি। মানুষ ভোটের বাক্সে তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। এ বারও যদি মেরুকরণের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, তা হলে ফের মানুষ তার জবাব দেবেন।