— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভাতার রাজনীতি’র অভিযোগ তুলে বারেবারেই সরব হয়েছেন রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। এ বারে সেই সরকারেরই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-কে একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প বলে উল্লেখ করে তাতে টাকার পরিমাণ আরও বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
চিঠিতে সাংসদ উল্লেখ করেছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডার রাজ্যের মহিলাদের কিছুটা আর্থিক সুরাহা দিয়েছে। তবে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে ফি মাসে এক হাজার থেকে বারোশো টাকা পর্যাপ্ত নয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পটিকে মহিলাদের ক্ষমতায়নে সহায়ক বলে দাবি করলেও বাস্তবে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার বদলে তা ভোট কুড়োনোর হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি-শাসিত মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে অনুরূপ প্রকল্পে বেশি টাকা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সাংসদ।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, রাজ্যের কোষাগারে ইতিমধ্যে প্রচুর চাপ রয়েছে। শুধুমাত্র এই প্রকল্পেই ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়। তবে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি কল্যাণমূলক নানা প্রকল্পের জন্য আরও বেশি আর্থিক বোঝা বহন করে এবং দক্ষতার সঙ্গেই প্রকল্পগুলি চলছে। পশ্চিমবঙ্গকে এই পরিস্থিতি থেকে বার করে আনতে মুখ্যমন্ত্রীকে কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন সাংসদ। তিনি লিখেছেন, রাজ্যের অর্থনীতিকে লাইনচ্যুত না করে লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে রাজস্ব বাড়াতে হবে। তার জন্য কর সংগ্রহের সঙ্গে রাজ্যের শিল্পায়নকে উৎসাহিত করা, দুর্নীতি দমন ও স্বচ্ছ শাসন প্রতিষ্ঠিত করা এবং শিক্ষায় উৎপাদনশীল বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।
পরে জ্যোতির্ময় বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে যা বলার, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে জানিয়েছি। হাজার-বারোশো টাকায় সংসারে কতটুকু আর সহায়তা হয়! দুর্নীতি রুখতে পারলে টাকার পরিমাণ বাড়ানো যায়। আমাদের রাজ্য সভাপতি ও বিরোধী দলনেতা তো বলেইছেন, রাজ্যে দল ক্ষমতায় এলে ওই প্রকল্পে তিন হাজার টাকা দেওয়া হবে।” রাজ্য নেতৃত্বের উল্টো পথে হেঁটে কার্যত কি সরকারি প্রকল্পের পক্ষে কথা বলছেন সাংসদ? জ্যোতির্ময়ের দাবি, “রাজ্য টাকা দেয় বটে, কিন্তু এই দুর্মূল্যের বাজারে তাতে লাভ বিশেষ হয় না। এ সব ভোট টানার কৌশল।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “এত দিন তো বিজেপি এই প্রকল্পকে ভাতার রাজনীতি বলেই কটাক্ষ করে এসেছে। দেরিতে হলেও এখন তারা মানছে, এই প্রকল্প নারীর ক্ষমতায়নে সহায়ক।” সাংসদকে তাঁর পাল্টা পরামর্শ, তিনি যেন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে এই প্রকল্প গোটা দেশে চালু করার কথা বলেন।