যোগী আদিত্যনাথ।
যোগীরাজ্যে নামবদলের খেলা চলছেই। তাজমহলের শহর আগ্রায় তৈরি হচ্ছে মুঘল জাদুঘর। সেই জাদুঘরের নাম ছত্রপতি শিবাজির নামে করার ঘোষণা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সোমবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে এ কথা জানিয়ে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যোগী বলেছেন, ‘‘মুঘলরা কখনও আমাদের নায়ক হতে পারে না।’’ সেই সঙ্গে সদর্পে ঘোষণা করেছেন, ‘‘মানসিক দাসত্বের কোনও চিহ্ন বহন করব না।’
আগ্রায় নির্মীয়মাণ মুঘল জাদুঘরে মুঘল আমলে ব্যবহৃত নানা দ্রব্য থাকবে। থাকবে ওই যুগ সম্পর্কিত নানা তথ্য। তার কাজ খতিয়ে দেখতে সোমবার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আদিত্যনাথ। সেখানেই তাঁর ওই নির্ঘোষ। পরে টুইট করেন, ‘‘আগ্রায় নির্মীয়মাণ জাদুঘর ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের নামে হবে। শিবাজি মহারাজ আমাদের নায়ক। জয় হিন্দ, জয় ভারত!’’
২০১৫ সালে উত্তরপ্রদেশের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব ওই জাদুঘর তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তাজমহলের খুব কাছেই ৬ একর জমির উপর গড়ে উঠছে প্রকল্পটি। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল মুঘল আমলের সংস্কৃতি, শিল্পকলা ইত্যাদির সাক্ষরবহনকারী নানা চিত্র, ওই যুগের রান্না সম্পর্কিত তথ্য, পোশাক-আশাক, অস্ত্রশস্ত্র ইত্যাদি সেখানে রাখা হবে। সূত্রের খবর, শিবাজির সময়ের নানা জিনিসপত্রও ওই জাদুঘরে রাখা হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাস্তায় কটূক্তি ট্যাক্সিচালকের, পুলিশে দিলেন সাংসদ মিমি
১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবরের হাত ধরে এ দেশে মুঘল সাম্রাজ্য স্থাপিত হয়। মাঝে কয়েক বার ধাক্কা খেলেও দেশে সিপাহি বিদ্রোহের সময় পর্যন্ত মুঘল শাসন প্রায় নিরবচ্ছিন্ন ভাবেই চলেছিল। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়কালে মুঘলদের সঙ্গে বারবার সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন মরাঠা শাসক শিবাজি (১৬৩০-১৬৮০)। সেই দ্বন্দ্বের ইতিহাসই এ দিন কৌশলে ফের চাঙ্গা করে দিতে চেয়েছেন আদিত্যনাথ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ইতিহাসকে আশ্রয় করে জাদুঘরের নামবদলের মাধ্যমে আসলে জাতীয়তাবাদী আবেগই উস্কে দিতে চেয়েছেন যোগী। বিশেষত, তাঁর আমলে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে নামকরণ যেন ‘প্রথা’ হয়ে গিয়েছে। এর আগে মুঘলসরাই স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামে করা হয়। ইলাহাবাদের নাম বদলে রাখা হয় প্রয়াগরাজ। ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ফৈজাবাদ ছিল জেলার নাম। কিন্তু সেই নামও পাল্টে যায় আদিত্যনাথেরই ছোঁয়ায়।
আরও পড়ুন: ‘আপনি গুণে দেখেননি, তাই বলছেন কারও মৃত্যু হয়নি’, পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মোদীকে খোঁচা রাহুলের