পুলিশের ঘেরাটোপের মধ্যে আতিক ও আশরাফের হত্যার ঘটনায় সাসপেন্ড পাঁচ পুলিশকর্মী। — ফাইল ছবি।
গ্যাংস্টার থেকে রাজনৈতিক নেতা হওয়া আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফকে খুনের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে চার দিন। অবশেষে ওই সময় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সূত্রের খবর, এক স্টেশন অফিসার-সহ পাঁচ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে।
আতিক-হত্যা তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে রাজ্য সরকার। সিট এই ঘটনার সময় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে গত দু’দিন ধরে কথা বলে একটি রিপোর্ট তৈরি করে। সেই রিপোর্টের পরই পাঁচ জনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাসপেন্ড হয়েছেন শাহগঞ্জের ইনস্পেক্টর তথা স্টেশন হাউস অফিসার (এসও) অশ্বিনীকুমার সিংহ। এ ছাড়াও দুই সাব ইনস্পেক্টর এবং দুই কনস্টেবলকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের পরিচয় এখনও প্রকাশ করেনি সরকার।
মঙ্গলবারই উত্তরপ্রদেশের আদিত্যনাথ সরকার পুলিশের এক অতিরিক্ত সিপিকে (এসিপি)বদলি করে। শনিবার প্রয়াগরাজের হাসপাতালের সামনে যখন আতিক ও তাঁর ভাইকে খুনের ঘটনা ঘটে তখন ওই এসিপি অকুস্থলে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এই কারণেই তাঁকে বদলি করা হল। ঘটনাচক্রে, তাঁকে বদলি করার খবরের পরেই জানা গেল পাঁচ পুলিশকর্মীকে এই ঘটনায় সাসপেন্ড করা হয়েছে।
শনিবার রাতে পুলিশ আতিক এবং আশরাফকে নিয়ে প্রয়াগরাজের একটি সরকারি হাসপাতালে যায়। সেখানে শারীরিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে আতিক ও আশরাফকে হাসপাতালের ভিতরে আনা হচ্ছিল। দু’জনেরই হাত বাঁধা ছিল একই হাতকড়ায়। দু’জনকে সেই সময় সাংবাদিকদের ছদ্মবেশে তিন দুষ্কৃতী আতিককে প্রশ্ন করার অছিলায় একেবারে সামনে চলে যায় এবং আতিকের মাথা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। হাতকড়া থাকায় দু’জনের কেউই আত্মরক্ষার কোনও সুযোগ পাননি। গুলির আওয়াজ পেয়েই আশপাশে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আতিক ও তাঁর ভাই লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় পুলিশের চোখের সামনেই তিন দুষ্কৃতী আতিক ও আশরাফকে পর পর গুলি করতে থাকে। আততায়ীদের মুখে ছিল জয় শ্রীরাম স্লোগান। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরেই অবশ্য তিন দুষ্কৃতী পুলিশের হাতে আত্মসমর্পণ করে। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠে যায়। ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি যে ছিল, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। যদিও কেন সরকার পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ঘটনার চার দিনের মাথায় পাঁচ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করল যোগী প্রশাসন।