— ফাইল চিত্র
হাথরসের ঘটনায় পুলিশের উপরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভরসা ছিল না বলে জানালেন উত্তরপ্রদেশের সিনিয়র বিজেপি নেতা ও মন্ত্রিসভার সদস্য সুনীল ভারালা। শ্রম প্রতিমন্ত্রী ভারালা জানিয়েছেন, সেই জন্যই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন যোগী। ভারালার কথায়, রাজ্যের সব পুলিশ ‘দুধে ধোয়া’ নন। সম্প্রতি সিবিআই তাদের চার্জশিটে জানিয়েছে, ধর্ষণের পর খুনের চেষ্টা করা হয় হাথরসের দলিত কন্যাকে। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ ও অভিযুক্তরা বরাবর দাবি করে আসছিল, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি।
ভারালার দাবি, আদিত্যনাথ আগাগোড়া নির্যাতিতার পরিবারের পাশে ছিলেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে বাড়ির অদূরে মেয়েটির দেহ ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে বাড়াবাড়ি করে ফেলে পুলিশ। মন্ত্রীর দাবি, সরকার এটা ভাল চোখে দেখেনি। সেখানকার পুলিশের উপরে মুখ্যমন্ত্রীর ভরসাও ছিল না।
সিবিআইয়ের চার্জশিটে অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট ভাবে দায়ী করার পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কার্যত মেনে নেওয়া হয়েছে, উচ্চবর্ণের চার অভিযুক্তের পক্ষ নিয়েই চলেছে পুলিশ। ১৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার পরে পুলিশ ১৯ তারিখে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করে। সেই বয়ানে ১৯ বছরের কিশোরী জানান, চার জন তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছে। তিন জনের নামও তিনি বলেন। কিন্তু তার পরেও পুলিশ এফআইএর-এ শুধু এক জনেরই নাম লেখে। নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষাও তারা করায়নি।
সিবিআই চার্জশিটে বলেছে, প্রধান অভিযুক্ত সন্দীপ ও নির্যাতিতার বাড়ি পাশাপাশি। ছোটবেলা থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও পরে মেয়েটি তা থেকে সরে আসেন। সন্দীপ অনেক চেষ্টা করলেও মেয়েটি একাধিক বার তাকে ফিরিয়ে দেন। চার্জশিটে বলা হয়েছে, এক দলিত কন্যার বার বার না-বলার স্পর্ধাই ক্রুদ্ধ করে তোলে সন্দীপ (২০), তার কাকা রবি (৩৫) এবং দুই বন্ধু রামু (২৬) আর লবকুশ (২৩)-কে। শাস্তি দিতেই তারা কিশোরীকে ধর্ষণ ও মারধর করে। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে চিকিৎসার পরে নির্যাতিতা মারা যান।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ অবশ্য আগাগোড়া দাবি করে এসেছে, কিশোরী মারধরে জখম হয়েছিলেন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। চাপে পড়ে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারায় অভিযোগ আনা হয়নি। তারা সকলেই এখন জেল হেফাজতে রয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত সন্দীপ জেল থেকে চিঠি লিখে পুলিশ ও আদালতের কাছে দাবি করেছিল, কিশোরীর সঙ্গে তার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। বাড়ির লোক তা মেনে না-নিয়ে কিশোরীকে মারধর করত। সে দিনও পরিবারের লোকেরাই মেয়েটিকে মারধর করেছিল। খবর পেয়ে সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পরে পরিবারের লোক তাদের ধরে মিথ্যা অভিযোগ করে যে তারাই মেয়েটিকে মারধর করেছে। ধর্ষণের অভিযোগও মিথ্যা বলে দাবি করেছিল সন্দীপ। কিন্তু সিবিআই তাদের চার্জশিটে যা বলেছে, বাড়ির লোকের বয়ানের সঙ্গেই তা মিলে যাচ্ছে।