স্বঘোষিত ধর্মগুরু যাতি নরসিংহানন্দ। ফাইল ছবি।
হরিদ্বার ঘৃণা-ভাষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের পর দ্বিতীয় গ্রেফতারির ঘটনা ঘটল। এ বার পুলিশের জালে যতি নরসিংহানন্দ গিরি। শুক্রবার এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ওয়াসিম রিজভি ওরফে জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ ত্যাগী।
হরিদ্বারে তথাকথিত ধর্ম সংসদে মুসলিমদের গণহত্যার নিদান দেওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশে তোলপাড় পড়ে যায়। হস্তক্ষেপ করতে হয় শীর্ষ আদালতকে। তার পরই শুক্রবার পুলিশ গ্রেফতার করে ওয়াসিম রিজভিকে। ওয়াসিম ধর্ম পরিবর্তন করে জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ ত্যাগী নাম ধারণ করেন। এই গ্রেফতারির পর মুখ খুলেছিলেন নরসিংহানন্দ। তিনি পুলিশ আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘তোমরা সবাই মরবে।’’ ঘটনাচক্রে তার পর নিজেই গ্রেফতার হয়ে গেলেন নরসিংহানন্দ।
হরিদ্বার ঘৃণা-ভাষণ মামলায় দায়ের হওয়া এফআইআরে ১০ জনেরও বেশি ব্যক্তির নাম রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নরসিংহানন্দ, জিতেন্দ্র ত্যাগী, অন্নপূর্ণা প্রমুখ। গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট উত্তরাখণ্ড সরকারকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে উত্তরাখণ্ড পুলিশ। তারই ফলশ্রুতি ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’টি গ্রেফতারির ঘটনা।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পটনা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশ ও সাংবাদিক কুরবান আলির দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল। যাতে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সম্ভব হয়, সে জন্য আবেদনকারীরা হরিদ্বারে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-ভাষণের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের আবেদন জানান শীর্ষ আদালতে।
গত বছর ডিসেম্বরের ১৭ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত হরিদ্বারে চলা তথাকথিত ধর্ম সংসদে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের অস্ত্র তুলে নেওয়া এবং ওই ধর্ম সম্প্রদায়ভুক্তদের প্রকাশ্যে হত্যা করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশ ও সাংবাদিক কুরবান আলি। সুপ্রিম কোর্ট উত্তরাখণ্ড সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশকে নোটিস পাঠায়।