যশবন্ত সিনহা।— ফাইল চিত্র।
অন্যায় ভাবে তাঁর কৃতিত্ব হাতিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, দাবি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহার। সোমবার প্রকাশিত হচ্ছে যশবন্ত সিনহার আত্মজীবনী ‘রিলেন্টলেস।’ তাতে তিনি দাবি করেছেন যে, জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প (এনএইচডিপি) এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার (পিএমজিএসওয়াই)পরিকল্পনা আসলে তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। কিন্তু তাঁকে কৃতিত্ব না দিয়ে বাহবা কুড়োচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
যশবন্ত সিনহার দাবি, ‘‘জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প আমারই মস্তিষ্কপ্রসূত। হঠাৎ করে এই প্রকল্প মাথায় উদয় হয়নি। বরং সাতের দশকে জার্মানিতে থাকাকালীন সে দেশের অটোবান্স প্রকল্প (দ্রুত গতির যান চলাচলের জন্য বিশেষ জাতীয় সড়ক) দেখে বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করি। সুযোগ পেলে ভারতেও এই সড়ক প্রকল্প চালু করব বলে তখনই ভেবে নিয়েছিলাম।’’
১৯৯৮ সালে ভারতে এনএইচডিপি প্রকল্প চালু হয়। তার আওতায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলির উন্নয়ন এবং সেগুলির প্রস্থ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ওই প্রকল্পের আওতায়ই দিল্লি, কলকাতা, মুম্বই এবং চেন্নাই—এই চার মেট্রো শহরের সংযোগ রক্ষাকারী ‘সোনালী চতুর্ভূজ’ জাতীয় সড়ক গড়ে ওঠে। এ ছাড়াও গড়ে ওঠে শ্রীনগর ও কন্যাকুমারীর সংযোগরক্ষাকারী নর্থ করিডর এবং পোরবন্দর ও শিলচরের সংযোগরক্ষাকারী ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর।
আরও পড়ুন: গলদ ‘ও’ রিংয়েই, ফুলে ফেঁপে ওঠেনি বলেই গভীর রাতে থমকে গেল চন্দ্রযান-২ অভিযান
দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের আমলে ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত অর্থ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন যশবন্ত সিনহা। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে অর্থ এবং বিদেশ দফতরও সামলান। বরাবর নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সমালোচক হিসাবে পরিচিত তিনি। তাঁদের সঙ্গে মতবিরোধের জেরেই গতবছর বিজেপি থেকে ইস্তফা দেন। যশবন্তের কথায়, ‘‘বাজপেয়ীর সঙ্গে একটি বৈঠকে আমিই প্রথম গ্রাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্প এবং তার জন্য আলাদা ভাবে অর্থ বরাদ্দ করার প্রস্তাব দিই। ওই প্রকল্পের নাম অটলবিহারী বাজপেয়ী গ্রাম সড়ক যোজনা রাখা হোক বলে পরামর্শ দিই। কিন্তু নিজের নামে ওই প্রকল্পের নামকরণে রাজি হননি বাজপেয়ী।’’
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের হুমকির আশঙ্কা, মুম্বইয়ে হোটেল থেকেই পুলিশকে চিঠি বিক্ষুব্ধদের
২০০০ সালে এই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা চালু হয়। প্রকল্পটি সফল হলে বিজেপি নেতাদের মধ্যে তার কৃতিত্ব হাতানোর হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বলে অভিযোগ যশবন্তের। তাঁর দাবি, ‘‘প্রকল্পের রূপায়ণে অনেকেই হয়ত যুক্ত ছিলেন, কিন্তু গোটা ব্যাপারটা আমারই মস্তিষ্কপ্রসূত।’’ যশবন্ত আরও জানান, সিভিল সার্ভিসে যুক্ত থাকার সুবাদে সারাজীবন আড়াল থেকে কাজ করতে শিখেছিলেন। কীভাবে আত্মপ্রচার করতে হয়, সংবাদমাধ্যমকে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, অনেকেই তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু তাতে বিবেক সায় দেয়নি তাঁর।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।