নোট বাতিলের জেরে দেশের বৃদ্ধিতে টানের আশঙ্কার মধ্যেই আরও আতঙ্কের বার্তা শোনালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর দাবি, সব থেকে খারাপ বিপর্যয় এখনও আসা বাকি।
নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধে মনমোহন এ দিন বলেন, পরিস্থিতি ভাল হওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার শূন্যগর্ভ দাবি। আজ দিল্লিতে কংগ্রেসের ‘জনবেদনা সম্মেলন’-এ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বকে লঘু করার জন্য মোদী ও মোহন ভাগবতকে দায়ী করেন রাহুল গাঁধী। হিন্দু ধর্মের ‘ধারক’ হয়েও তাঁরা দেশের ‘আত্মা’কে শেষ করতে চাইছেন বলে রাহুলের অভিযোগ। আর সে কারণে ১৮ জানুয়ারি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘেরাও অভিযান করবে কংগ্রেস। তাঁর মতে, ইতিহাসে এই প্রথম বার সর্বত্র হাসির খোরাক হয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। রাহুলের পরিকল্পনা হল, গোটা দেশে চার মাথার মোড়গুলিতে সভা করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন করা হবে। কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে আজ এ নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এই সম্মেলনেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম অভিযোগ করেন, সামন্ততান্ত্রিক পথে হেঁটে প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে নোট বাতিল করিয়ে নিয়েছেন। এত টুকুই নয়, ৮ নভেম্বর মন্ত্রীদের বন্ধক রেখে আসলে মন্ত্রিসভার বৈঠকই হয়নি। সেই বৈঠকের কোনও রেকর্ডও নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত একা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের আম-জনতার দুর্ভোগ বাড়িয়েছেন।
সে কারণেই রাহুল এখন কংগ্রেসের গোটা আন্দোলন মোদী-কেন্দ্রিক করতে চাইছেন। সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব অহমেদ পটেল আজ ঘোষণা করেন, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে রাজ্যে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত চার মাথার মোড়ে একটি চেয়ার রাখা হবে। সেই চেয়ারে নকল প্রধানমন্ত্রীকে বসিয়ে কিংবা খালি রেখে প্রশ্ন করা হবে নরেন্দ্র মোদীকে। বিজেপির মতো ঘৃণার রাজনীতি কংগ্রেস করে না বলেই কোনও শাস্তি দিতে চায় না দল। শুধু মানুষের প্রশ্ন তুলে ধরতে চায়।
মোদী সরকারের এক শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘রাহুল যে বলেছেন, এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রীকে খোরাক করা হয়েছে, সেটি কী মনমোহনে সিংহের উদ্দেশে বলা?’’ কংগ্রেসের বক্তব্য, অবশ্যই এটি মোদীর জন্যই বলা। এ দিন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নোট বাতিলের পরে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আনুমানিক ১-২ শতাংশ বৃদ্ধির হার কমবে। আর ১ শতাংশ কমা মানে দেড় লক্ষ কোটি টাকার লোকসান।