গুজরাত ছাড়ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে জীবিকার টানে নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে আসা হিন্দিভাষীদের উপরে হামলা শুরু হতেই চোখে পড়ার মতো ভিড় স্টেশনগুলিতে। কিন্তু হামলার কথা মেনেও রাজ্য পুলিশের ডিজি-র বক্তব্য, ‘‘বহিরাগতেরা উৎসবের মরসুমে বাড়ি ফিরলে তার অন্য মানে করা উচিত নয়।’’
১৪ মাসের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সবরকণ্ঠা জেলার হিম্মতনগরের কাছে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিহারের এক বাসিন্দা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হামলা শুরু হয়েছে হিন্দিভাষী বহিরাগতদের উপরে। রাজ্য পুলিশের ডিজি শিবানন্দ ঝা বলেন, ‘ছ’টি জেলায় হিংসা ছড়িয়েছে, যার মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা মেহসানা এবং সবরকণ্ঠার।’’ ডিজি জানান, গাঁধীনগর, পাটান এবং অমদাবাদেও হামলার অভিযোগ উঠেছে। এখনও পর্যন্ত ৩৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৪২টি। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দু’জনকে চিহ্নিত করেছে সাইবার ক্রাইম সেল। রাজ্য রিজার্ভ পুলিশের ১৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়েছে উপদ্রুত এলাকাগুলিতে।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় নেতাদের ক্রমাগত হুমকির জেরেই হিন্দিভাষীদের গুজরাত ছাড়ার হিড়িক। যাঁদের সে উপায় নেই, তাঁদের ঠিকানা আপাতত বন্ধু বা আত্মীয়দের ‘সুরক্ষিত’ আশ্রয়। ডিজি বলেছেন, ‘‘অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছি দরকারে বাস স্ট্যান্ড ও স্টেশনে গিয়ে খতিয়ে দেখতে যে, ভয়ের চোটে কেউ পালাচ্ছেন কি না। সে ক্ষেত্রে কথা বলে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’’
হিন্দিভাষীদের আক্রমণের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে গুজরাতের ঠাকোর সম্প্রদায়ের দিকে। যদিও এ কথা উড়িয়ে দিয়েছেন ঠাকোর নেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক অল্পেশ ঠাকোর। শান্তি-সম্প্রীতির বার্তার পাশাপাশিই অল্পেশ হুমকি দিয়েছেন যে, তাঁর সমর্থকদের উপর থেকে মিথ্যা মামলা তোলা না-হলে আগামী ১১ তারিখ থেকে ‘সদ্ভাবনা অনশন’ শুরু করবেন তিনি। অল্পেশের অভিযোগ, বেসরকারি কারখানাগুলিতে অল্প মাইনেতে কাজ দেওয়া হয়েছে বহিরাগতদের। ৮০% চাকরি স্থানীয়দের পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। ইতিমধ্যেই শিল্পনগরীগুলিতে মোটরসাইকেলে এসে বহিরাগত কর্মীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে। ডিজি জানান, এই কারখানাগুলির আশপাশেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।