Jammu and Kashmir

Kashmir: আতঙ্ক! ফের বিপন্ন পরিযায়ীরা, ভূস্বর্গ ছেড়ে ঘরমুখী ঢল শ্রমিকদের

উপত্যকায় ভিন্‌ রাজ্যের বাসিন্দাদের উপর একাধিক হামলার পর শ্রমিকদের পরিবারগুলিকে এখন ভয়ের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৫৩
Share:

বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় মঙ্গলবার জম্মু স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ছবি: পিটিআই।

হিংসার আতঙ্কে এখন শয়ে শয়ে পরিযায়ী শ্রমিক কাশ্মীর ছেড়ে যাচ্ছেন। উপত্যকায় ভিন্‌ রাজ্যের বাসিন্দাদের উপর একাধিক হামলার পর শ্রমিকদের পরিবারগুলিকে এখন ভয়ের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। তাই শীতের মরসুম শুরু হওয়ার আগেই কাশ্মীর ছেড়ে যেতে চাইছেন এই শ্রমিকেরা। তবে আতঙ্কের আবহেও তাঁরা বলছেন, যে ভাবে কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের কাছে টেনে নিয়েছিলেন, সে কথা ভুলতে পারবেন না।

Advertisement

এর আগে লকডাউনের সময়ে রুটিরুজি খোয়াতে হয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। সেই পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার পর কাশ্মীরে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা। ভেবেছিলেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। রোজগার সবে শুরু হয়েছিল। তবে নতুন করে সঙ্কট নেমে আসতে বেশি দিন লাগল না। কাশ্মীরে এখন যে ভাবে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের উপর হামলা করছে জঙ্গিরা, তাতে উপত্যকা ছেড়ে পালানোর পথই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে আগ্রহী শ্রমিকদের ভিড় বাড়ছে শ্রীনগরের ট্যুরিস্ট রিসেপশন সেন্টারে। সেখানেই দেখা মিলল উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা গুলাব রামের। বললেন, ‘‘আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। কাশ্মীরের সর্বত্র এমনই পরিস্থিতি। জম্মু যাওয়ার টিকিট নিতে এখানে এসেছি। জম্মু থেকে উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে চলে যাব।’’ গুলাবের মতোই বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান থেকে কাজ করতে আসা অনেক শ্রমিক পৌঁছেছেন এখানে। বিহার থেকে কাশ্মীরে এসে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করতেন বিজয়। তাঁকে বলা হয়েছে, ফেরার টিকিট এখনই মিলবে না, অপেক্ষা করতে হবে আগামিকাল পর্যন্ত। উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরের বাসিন্দা রাজু সঙ্গে জনা কুড়ি পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে এসেছেন। জানালেন, পরিবারের সদস্যদের ফোন আসছিল বারবার। আত্মীয় পরিজনেরা তাঁদের কাশ্মীর ছেড়ে চলে আসারই পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে ফিরতে বললেই কি ফেরা যায়? শ্রীনগরেই বাড়ি ভাড়া করে থাকেন ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক বিনোদ। তাঁর সমস্যা হল, ১৫ দিনে যে কাজকর্ম করেছেন, তার টাকা এখনও হাতে আসেনি। প্রশাসনের কাছে বিনোদ ও তাঁর সহকর্মীরা আর্জি জানিয়েছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত মজুরির টাকা পাচ্ছেন, তত দিন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। টাকা এলেই কাশ্মীর ছেড়ে যাবেন তাঁরা।

Advertisement

এরই মধ্যে পুলিশের নামে একটি ভুয়ো অ্যাডভাইসরি নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায় কাশ্মীরে। ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারা যাতে থানা কিংবা সেনা ক্যাম্পে পৌঁছে যান, সে কথা বলা হয়েছিল সেখানে। পরে দেখা যায়, গোটা ব্যাপারটিই ভুয়ো। তবে ট্যুরিস্ট রিসেপশন সেন্টারে বাস না মেলায় অনেক পরিযায়ী শ্রমিকই ভিড় করছেন রেলস্টেশনে। এ দিকে, শ্রীনগরে ৫ অক্টোবর সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলার তদন্ত হাতে নিতে চলেছে এনআইএ। সে দিন মাখনলাল বিন্দ্রো নামে শ্রীনগরের এক ওষুধ ব্যবসায়ী, ভেলপুরি বিক্রেতা বীরেন্দ্রকে গুলি করে মেরেছিল জঙ্গিরা।

সাধারণ নাগরিক ছাড়াও গত সোমবার থেকে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে সেনার নয় জন জওয়ান ও আধিকারিক নিহত হয়েছেন। পুঞ্চ ও রাজৌরি জেলাগুলির গভীর জঙ্গলের মধ্যে গত নয় দিন ধরে সেনা ও জঙ্গিদের গুলির লড়াই চলছে। এ জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্যেই সেনাপ্রধান এম এম নরবণে আজ জম্মুতে পৌঁছেছেন। নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন তিনি। ২২ অক্টোবর অমিত শাহ কাশ্মীরে আসতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement